হাকিকুল ইসলাম খোকন,নিউইয়র্ক, ০৩ অক্টোবর :


২০১৮ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণ-কেন্দ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে বাংলাদেশ -আজ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলতি ৭৩তম অধিবেশনের তৃতীয় কমিটির আওতায় সামাজিক উন্নয়ন এজেন্ডাভুক্ত আলোচনায় বক্তব্য প্রদানকালে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।খবর বাপসনিঊজ।

তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সামাজিক উন্নয়নেও সুনির্দিষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ তিনধাপ এগিয়ে ১৮৯ টি দেশের মধ্যে ১৩৬তম অবস্থানে পৌঁছেছে”। শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও গড় আয়ু ৭২ বছরে উন্নীত হওয়ার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পয়:নিষ্কাশনে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এ সংশ্লিষ্ট সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পেরেছে বলেই সরকার এ সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে”। সামাজিক উন্নয়নের এই সাফল্যে সরকারি পদক্ষেপের পাশাপাশি এনজিওসমূহও ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “এবছর ২ এপ্রিল বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রকে সাথে নিয়ে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্ট আয়োজন করে যেখানে যোগ দেন বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ‘শুভেচ্ছা দূত’, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে এটি ছিল একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ”।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষে দক্ষতা ও জ্ঞানকে মূল চালিকা শক্তি রূপে গ্রহণ করে রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর সমাজের সকলকে সাথে নিয়েই টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার। জাতিসংঘ মহাসচিবের এজেন্ডা-২০৩০ এর টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিষয়ক রিপোর্টে বাংলাদেশের উন্নয়ন পদক্ষেপসমূহের কথা তুলে ধরা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

এছাড়া, প্রাথমিক পর্যায়ে শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষার হার ৪৫% থেকে ৭২.৯% উন্নীত হওয়া, জাতীয় উন্নয়নে যুব-শক্তির পূর্ণ ব্যবহার, জনস্বাস্থ্য খাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি, দেশব্যাপী ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়াসহ ব্যাপক সামাজিক উন্নয়নের উদাহরণ রাষ্ট্রদূত মাসুদ তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসের শেষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনের হাই-লেভেল সপ্তাহ সমাপ্তির পরপরই চলতি সপ্তাহ হতে সাধারণ পরিষদের ছয়টি প্রধান কমিটির পৃথক পৃথক কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদসহ জাতিসংঘের অন্যান্য মূল অঙ্গসমূহের কাজও একইসাথে শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ক্রিসমাসের ছুটির আগ পর্যন্ত জাতিসংঘের অন্যতম ব্যস্ত এই সময়কালে কমিটিগুলোর কার্যকম চলবে এবং এর প্রেক্ষিতে ডিসেম্বর/জানুয়ারি সময়কালে সাধারণ পরিষদের অধিকাংশ রেজ্যুলেশনসমূহ গৃহীত হবে।