মোহাম্মদ হোসেন,হাটহাজারী

চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের নাজিরহাট ও চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের মদুনাঘাট পর্যন্ত যত্রতত্র গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও প্যাথলজি। স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মকানুন সম্পুর্ন অমান্য করে কতিপয় প্যাথলজি ও এক্সরে ক্লিনিক জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও প্যাথলজিস্টবিহীন এসব ক্লিনিকের চিকিৎসা ও পরীক্ষা- নিরীক্ষা নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন থাকলেও লোকজন নিরুপায় হয়েই তাদের শরণাপন্ন হচ্ছে।

সেসব প্রতিষ্টানে চিকিৎসার নামে চলছে জমজমাট অবৈধ ব্যবসা আর অপচিকিৎসা। রোগীদের কাছে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে গলাকাটা টাকা। তারাও মানছে না সরকারি নিয়মনীতি কিংবা নির্দেশনা। জেলা জুড়ে চিকিৎসা ব্যবস্থায় এমন অরাজকতা চললেও বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরাও রয়েছে নির্বিকার। দীর্ঘ দিন ধরে অনুমোদনহীন এ সব ক্লিনিক ও প্যাথলজি গুলোর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান না থাকায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বলে জানান ভুক্তভোড়িরা। এ সব প্রতিষ্টান পরিচালিত হলেও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, অনেকটা লোক দেখানো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাটহাজারী পৌর শহরে কয়েকটি ক্লিনিক ও প্যাথলজি ছাড়াও অধিকাংশই ক্লিনিকেরই নেই বৈধ কাগজপত্র। অনেক ক্লিনিকে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে সব শর্তাবলী রয়েছে তার কোন নাম গন্ধ নেই, না আছে কোন নিয়মনীতি। অধিকাংশদেরই নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স, অপারেশন থিয়েটার ও ওষুধপত্র। এমনকি এমন অনেক ক্লিনিক আছে যেখানে রয়েছে মাত্র দু’টো কক্ষ। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে শত শত মানুষ প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছেন প্রতারণার।

বাংলাদেশ প্রাইভেট প্রাকটিস এন্ড মেডিকেল অ্যাক্ট ১৯৯২ অনুযায়ী ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ও নির্ধারিত স্থান, জীবাণুমুক্ত কক্ষ বিশিষ্ট ভবন, অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার ও চিকিৎসার সরঞ্জামাদি ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে ডাক্তার, আবাসিক ডাক্তার, সার্জন, স্টাফ নার্স (ডিপ্লোমা) থাকতে হবে, প্রতি দশ বেডের জন্য তিনজন ডাক্তার, এক জন করে তিন শিফটে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একইসঙ্গে প্রতি দশ বেডের জন্য ছয় জন স্টাফ নার্স (ডিপ্লোমা) তিন শিফটের জন্য দুইজন করে সার্বক্ষণিক ডিউটি পালন করবেন। কেবল এসব শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে বেসরকারিভাবে কোন ক্লিনিক রেজিস্ট্রেশন দেয়ার কথা। অথচ এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিতিমালা অনুযায়ী নজরদারি নেই বললেই চলে। আবার রেজিস্ট্রেশন আছে এমন কতোগুলো ক্লিনিকেও এসব নিতিমালা ও শর্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না। কথিত এসব ক্লিনিকের রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে রয়েছে নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক। উপজেলার প্রান প্রধান সড়ক ও হাট-বাজার গুলোতে নিত্য নতুন সাইনবোর্ড লাগিয়ে নির্বিঘেœ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এ সব প্রতিষ্টান। বেশি ভাগ প্রতারিত হচ্ছে গ্রামের সহজ সরল মানুষ যারা বাধ্য হয়ে এ সব প্রতিষ্টানে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়। প্রতিটা ক্লিনিক ও প্যাথলজি অপচিকিৎসা গুলো তদারকি করার দাবী করেন ভুক্তভোগিরা।এ বিষয়ে বর্তমান নবাগত ইউ এন ও রুহুল আমিন এর হস্থক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল।##