সিবিএন:

পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলতে নামার আগে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের প্রস্তুতিতে এমন দৃশ্য দেখা গেল শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ১ নম্বর গ্রাউন্ডে। বৈরি আবহাওয়াতেও অনুশীলনের পুরোটা সময় অবশ্য ফুরফুরে মেজাজেই ধরা দিলেন টাইগ্রেস দলের সদস্যরা।

রোববার সকালের সেই হঠাৎ বৃষ্টির বেগ পরে বাড়লেও ক্যাচ আয়ত্তে আনার চেষ্টা থামেনি রুমানাদের। পানিতে বল ভিজে যাওয়ায় হাতে জমছিল না ঠিকমত। পিচ্ছিল বল ভেজা হাতে ধরার চেষ্টাই তখন বাড়তি চ্যালেঞ্জ। যাতে জেতার দৃশ্য বলে দেয় পাকিস্তান-বধে কতটা মরিয়া টিম টাইগ্রেস।

একটা সময় অবশ্য বৃষ্টির কাছে হার মানতেই হয়েছে। তিন ঘণ্টা অনুশীলনের পরিকল্পনা থাকলেও করা গেছে তার অর্ধেকটা সময়।

নেটে বোলিং মেশিন বসানোর কাজ চলছিল। কক্সবাজারের বয়সভিত্তিক দলের ছেলেরা এসেছিল সালমা-রুমানাদের বোলিং করতে। অলস সময় কাটিয়ে তাদের ফিরে যেতে হয়েছে। এদিন ব্যাটিং-বোলিংয়ের স্কিল অনুশীলন করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ব্যস্ততা বেড়েছে মাঠকর্মীদের। ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতমানের না হওয়া চিন্তা বেড়েছে তাদের।

তিন ঘণ্টার শিডিউল সময়ে আর সূর্যের দেখা মেলেনি। বৃষ্টিতে ভিজে অনুশীলন যতটুকু দীর্ঘায়িত করা গেছে, সেটিই ম্যাচের একদিন আগে সান্ত্বনা হয়ে থাকল নারী দলের ক্রিকেটারদের কাছে। এর মাধ্যমে অবশ্য একটি চিত্র ঠিকই ফুটে উঠেছে। সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের আবহাওয়ার রহস্যের জট ধরা আর সে অনুযায়ী নিজেদের পরিকল্পনা সাজানোর পথ খুঁজে পেয়েছেন মেয়েরা।

হোম সিরিজের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ এখানে খেলা ও বেশ কয়েকবার অনুশীলন ক্যাম্প করায় যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তার ষোলোআনা রোববার কাজে লাগিয়েছে টিম টাইগ্রেস। এবার কন্ডিশনের বোঝাপড়া ম্যাচে কাজে লাগানোর অপেক্ষা।

জাহানারা আলম

কক্সবাজারের আলো-বাতাস চেনা, সে সুযোগ শতভাগ কাজে লাগাতে চান জাহানারা আলম। চ্যানেল আই অনলাইনকে লাল-সবুজ দলের পেসার বললেন, ‘আমরা বৃষ্টির মধ্যেও অনুশীলন করলাম। সিরিজের মধ্যেই বৃষ্টি হতে পারে। আসলে এখানে এত বেশি খেলেছি যে কখন কেমন থাকবে সেটা আমরা ভালো বুঝি। আমরা কন্ডিশনের সুযোগটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো। আমাদের লক্ষ্য পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ জয়।’

গত জুনে মালয়েশিয়ায় পাকিস্তানকে হারিয়েই এশিয়া কাপে মোমেন্টাম পেয়েছিল বাংলাদেশ। পরে ফাইনালে শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তোলে সালমা খাতুনের দল।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সবশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয়েছিল কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্টের এই স্টেডিয়ামে। ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও হারতে হয়েছিল টি-টুয়েন্টি সিরিজ। সেটি অবশ্য অনেক আগের কথা, ২০১৪ সালে।

এবার টি-টুয়েন্টি দিয়ে শুরু হচ্ছে সিরিজ। ৪ বছর আগে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতিই জাহানারার কাছে এবার টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস।

‘২০১৪ সালে এখানেই আমরা একটা সিরিজ জিতেছিলাম। সেটি অবশ্যই প্রেরণা যোগাবে মাঠে। দল হিসেবে আমরা খুব ভালো অবস্থায় আছি।’

জাহানারা-রুমানারা হোটেলে ফিরে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর কক্সবাজার পৌঁছেছে পাকিস্তান দল। দুটি দলই অবস্থান করছে ওসেন প্যারাডাইস হোটেলে। নিয়মিত অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ ইনজুরিতে থাকায় জাভেরিয়া খানের কাঁধে সফরকারীদের নেতৃত্বভার।

নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণই পাচ্ছে গুরুত্ব। যে কারণে চারটি টি-টুয়েন্টির পাশে ওয়ানডে কেবল একটি।

২ অক্টোবর টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ। ৩, ৫ ও ৬ অক্টোবর বাকি তিন ম্যাচ। একমাত্র ওয়ানডে মাঠে গড়াবে ৮ অক্টোবর।