এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া

আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, সরকার প্রধান শেখ হাসিনার অধীনে সংবিধান অনুযাযী আগামী ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে একাদশ সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন বানচাঁল করতে সেই ১/১১ এর কুশিলবরা এবার বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জোট বেঁেধছে। তাঁরা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। তাদের এই স্বপ্ন শুধুই স্বপ্ন থেকে যাবে। বাংলার জনগন জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন সফলতার জোয়ারে নতুন জোট ওয়ালাদের সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে সাগরে নিক্ষেপ করবে।

তিনি বলেন, তাঁরা দেশের সুষ্ঠ পরিবেশ বিঘিœত করতে যতই জোট করুক, ক্ষমতার লোভে গোপন আতাঁত করুক, ইনশাল্লাহ কিছুতেই লাভ হবেনা। উপরে একমাত্র আল্লাহ সহায় থাকলে দুনিয়ার এমন কোন শক্তি নেই জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে একাদশ নির্বাচন প্রতিহত করতে পারে। নির্বাচন যথাসময়ে হবেই হবে। তিনি সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মেসি নেইমাররা বিশ্বকাপে পেলান্টি গোল মিস করেন, কিন্তু রাজনীতির মাঠে জননেত্রী শেখ হাসিনা গোল মিস করেনা। তিনি অবশ্যই অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছৈন।

মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী একাদশ নির্বাচন হচ্ছে শেখ হাসিনার বিজয়ের নির্বাচন। উন্নয়নের প্রতীক নৌকার বিজয়ের নির্বাচন। এই বিজয় আমাদেরকে অব্যাহত রাখতে হবে। ৭১ সালের ঘাতকদের সঙ্গি বিএনপি জাতীয় ঐক্যের নামে আবারো নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সেই ষড়যন্ত্র কোনভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবেনা, দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে মাঠে। তার আবারো আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করতে আওয়ামীলীগের সকলস্তরের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ সয্যা থেকে বৃদ্দি করে একশত সয্যায় উন্নীত করণে ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দে পাঁচটি ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিফলক উন্মোচন পরবর্তীতে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি সমাবেশে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আহবান জানিয়ে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চকরিয়া-পেকুয়া আসনে নৌকার প্রতিকের প্রার্থীকে জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এখানে কোন ধরণের ভেদাভেদ চলবেনা।

চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলমের সভাপতিত্বে এবং পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় চকরিয়া হাসপাতাল মাঠে ফলক উন্মোচন পরবর্তী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এমএ মোহী পিএসসি, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন সিআইপি, কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডা.মো.আবদুস সালাম, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কারেবী, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ত্রান সম্পাদক নুরুল আবছার, বর্তমান কমিটির সদস্য আমিনুর রশিদ দুলাল, এসএস গিয়াস উদ্দিন, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলম বুলবুল, মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুল চেয়ারম্যান, সহ-সভাপতি মকছুদুল হক ছুট্টো, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু, লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম।

বিকাল তিনটায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম চকরিয়া হাসপাতালে পৌছার কথা। কিন্তু তিনি সমাবেশ মঞ্চে পৌঁছেন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে। এরআগে সমাবেশে আগত জনগনকে উদ্বুদ্ধ করতে দুপুর দুইটা থেকে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোক্তার আহমদ চৌধুরী, এম আর চৌধুরী, ছৈয়দ আলম কমিশনার, আবু মুছা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, শাহনেওয়াজ তালুকদার, জেলা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক সোলতান আহমদ, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তপন কান্তি দাশ, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন মানিক, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত ওসমান চেয়ারম্যান, সাংগঠনিক সম্পাদক চকরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজবাউল হক, চকরিয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশিরুল আইয়ুব, কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন, বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল বশর, আওয়ামীলীগ নেতা মিফতাব উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক রেজাউল করিম কাউন্সিলর, যুগ্ম সম্পাদক সেলিম সিকদার লিটন, ফেরদৌস ওয়াহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান লিটন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম শহীদ, সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছির, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শওকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বাবলা দেবনাথ, চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম সোহেল, লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিম, আওয়ামীলীগ নেতা আমির হোসেন আমু, চকরিয়া উপজেলা শ্রমিকলীগের আহবায়ক জামাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ হায়দার আলী, শেফায়েতুল কবির চৌধুরী বাপ্পী, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলাম রাহিত, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ মারুফ, সাধারণ সম্পাদক রুবেল মাহমুদ, চকরিয়া পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা পারভেজ ও ডুলাহাজারা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবদুল বারেক টিপু প্রমুখ।

সমাবেশে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলমের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম চকরিয়া উপজেলা উপকুলীয় অঞ্চলে (মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৩লাখ জনগনের বসবাস) ৩১ সয্যা বিশিস্ট নতুন আরও একটি হাসপাতাল অনুমোদন দেয়ার ঘোষনা দেন।

সমাবেশের আগে সিভিল সার্জন ডা.আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ১’শ শয্যার হাসপাতাল ভবন নির্মাণ কাজের ফলক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া-পেকুয়ার সাংসদ হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছ, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এমএ মোহী পিএসসি, চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক মো.আবুল কাসেম, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা.মো.আবদুস সালাম, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তনর কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমদ, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, চকরিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মতিউল ইসলাম, চকরিয়া থানার ওসি মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ শাহবাজ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১’শ শয্যার হাসপাতাল ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিফলক উন্মোচন ছাড়াও এসময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিফলক।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশল বিগ্রেডিয়ার জেলারেল এমএ মোহী সমাবেশে বলেন, ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালের বর্তমান করিডোরের ভেতরে ৭ তলা বিশিষ্ট ১’শয্যার নতুন হাসপাতাল ভবনটি নির্মাণ কাজ শেষ হবে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে।

কাজের তদারককারী প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারি প্রকৌশলী মোরশেদুল আলম বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিসিএল ম্যাগ জয়েন্ট ভ্যান্সার কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর ইতোমধ্যে হাসপাতালের নতুন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। প্রকল্পের আওতায় এখানে পর্যায়ক্রমে নির্মিত হবে পাঁচটি আধুনিকমানের নতুন ভবন। তারমধ্যে আছে একশত সয্যায় উন্নীতকরণে সাততলা ফাউন্ডেশনে ৪তলা বিশিষ্ট নতুন হাসপাতাল ভবন, হাসপাতালের তত্তাবধায়কের বাসা, ৫তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার, ৫তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের নার্স কোয়ার্টার ও ডক্টরস কোয়াটার। এছাড়া নির্মিত হবে গাড়ির রাখার গ্যারেজ এবং চালক হাউজ। ##

এম.জিয়াবুল হক

নিজস্ব প্রতিনিধি,চকরিয়া