ছবির ক্যাপশান: নবীন সৈনিকদের মধ্যে সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ সৈনিককে পুরস্কার প্রদান করছেন প্রধান অতিথি।


মোঃ নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক বলেছেন, সীমান্তে মাদক চোরাচালানসহ সব ধরণের অপরাধ দমনে বিজিকে আরো আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বর্ডারে নতুন নতুন বিওপি স্থাপন করা হচ্ছে। পর্বত্য অঞ্চলের সীমান্তে সড়কের কাজ দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে। বর্ডারে সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিওপি স্থাপনের মাধ্যমে সীমান্ত আরো সুরক্ষিত হবে।
মায়ানমার সেনা বাহিনীর ভূূয়া ছবি প্রকাশের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নানা সময়ে ঘটে যাওয়া ছবি প্রকাশে করে তাঁরা অত্যান্ত অন্যায় কাজ করেছেন। যেটি ভূঁয়া হিসাবেও প্রমাণিত হয়েছে। ওই ঘটনার জন্য তাদের কাছে রাষ্ট্রীয় নিয়মে সাথে সাথে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিজিবি’র কোন সদস্য অপরাধে জড়িয়ে পড়লে সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৭ জন বিজিবি সদস্যকে বরখাস্তও করা হয়েছে। সামাজিক প্রতিরোধে দেশে মাদকের চাহিদা কমিয়ে আনলে বন্ধ হবে মাদক পাচার।
মায়ানমার সেনা ও সীমান্ত পুলিশের (বিজিপি) সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে মাদক প্রবেশে ওই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা জড়িত রয়েছে। তারা জড়িত না থাকলে আমাদের দেশে কখনো ইয়াবা আসত না। তাদের কিছু বললেও তারা নাখ-কান বন্ধ করে থাকে। ২৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে ৯২-তম ব্যাচ রিক্রুটদের সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এবার চতুর্থ দফায় বিজিবিতে ৪৯ জন নারী সৈনিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বিজিবি‘র একমাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড স্কুলে
অনুষ্ঠিত সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির সঙ্গে অভিবাদন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, বায়তুল ইজ্জত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেন এনডিসি,পিএসসি। কুচকাওয়াজে আরো উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম ১৫ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোঃ মাকসুদুর রহমান পিএসসি, চট্টগ্রাম নেভাল এরিয়া কমান্ডার রিয়ার এ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ বিএসপি, এয়ার কমডোর এম মফিদুর রহমান বিইউপি ও সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল হোসেন, সাংসদের একান্ত সচিব মো. সাহেদ ও মো. বেলাল উদ্দিনসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সামরিক ও বিজিবি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং নবীন সৈনিকদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কুচকাওয়াজে প্যারেড কমান্ডার ছিলেন মেজর কাজী মঞ্জুরুল ইসলাম ও প্যারেড এ্যাডজুটেন্ট সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কুচকাওয়াজে সৈনিকদের উদ্দেশ্যে তিনি
বলেন, বিজিবি একটি দক্ষ, চৌকষ ও এবং প্রশিক্ষিত বাহিনী। একটি বলিষ্ঠ ও দক্ষ বাহিনী গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে বেশী প্রযোজন কঠোর প্রশিক্ষন, সৎচরিত্র , মানসিক দৃঢতা, অধ্যাবসায়, শৃঙ্খলাবোধ এবং সঠিক নেতৃত্ব। তিনি সকলকে সর্বদা উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আনুগত্যশীল থাকার এবং নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব বজায় রাখার উপদেশ দেন। সকাল ৮ঘটিকা হতে পর্যায়ক্রমে মার্কারদের প্যারেডে যোগদান, বাদক দলের মাঠে প্রবেশ, রিক্রুটদের প্যারেড মাঠে প্রবেশ, জাতীয় ও বিজিবি পতাকাবাহী দলের প্রবেশ, প্রধান অতিথির আগমন ও প্যারেড পরিদর্শন, রিক্রুটদের শপথ গ্রহণ, পুরস্কার বিতরণ, প্রধান অতিথির ভাষণ, সংঘবদ্ধ কুচকাওয়াজ, বাদকদলের মার্চ প্রভৃতি আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সকাল ১১টায় অনুষ্ঠান মালা সমাপ্ত হয়। প্রধান অতিথি ৯২তম রিক্রুট ব্যাচে সৈনিকদের মধ্য হতে কুচকাওয়াজে সর্ববিষয়ে মোঃ সজিব হোসেনকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রদান করেন।