রামু-মরিচ্যা সড়কে জাল ফেলে রাস্তায় মাছ ধরার অভিনয় করছে । তারপরও কর্তৃপক্ষের সম্বিত হয় না !


কামাল শিশির,রামু :

কক্সসবাজার রামু-মরিচ্যা সড়কের ১৬ কিলোমিটারজুড়ে অসংখ্য গর্ত আর গর্ত। কোনো কোনো গর্ত দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন ছোট ডোবা। ফলে উপজেলার প্রধান সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ।উখিয়ার মরিচ্যা থেকে রামু উপজেলা সদরে আসতে সময় লাগত আধা ঘণ্টা। এখন লাগে এক থেকে দুই ঘণ্টা।সরেজমিন দেখা গেছে, রামু চৌমুহনী থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা চেকপোস্ট মোড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের বিভিন্ন অংশে শত শত গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও গর্তের গভীরতা ৭-৮ ইঞ্চি, কোথাও এক-দেড় ফুট। স্থানীয়রা জানান, গত এক বছরে নানা উন্নয়নে এই সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করেছে। বর্ষা মৌসুমে এসব ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কের বেহাল দশা হয়েছে।

খুনিয়াপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল্লা জানান, সড়কের দ্রুত সংস্কার না হলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল মনসুর বলেন, সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। কোনো ঘটনা ঘটলে সড়কের কারণে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে না পুলিশ।গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের পাশেই রয়েছে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন রামু সেনানিবাস, বিজিবির ৫০ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর, এশিয়ার বৃহৎ আইসোলেটেড নারিকেল বাগান ও মোগল শাসন-আমলের স্মৃতিবিজড়িত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক রামকুট বনবিহার, হিন্দু সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান রামুকোট তীর্থধাম, রামুর বাসিন্দা সেলিম জানান, বড়ঢেফা এলাকার দারিয়ারদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সড়কে দেড় ফুট গভীর গর্ত হয়েছে। ওই এলাকায় চারটি স্থানে প্রায় ডোবার মতো গর্ত হয়েছে। প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে, গাড়ি উল্টে যায়। সড়কটি দ্রুত সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লুৎফুর রহমান। তিনি আরো জানান, সড়কটি সংস্কারে শিগগিরই দরপত্র আহ্বান করা হবে। বাজেট পাওয়া গেলে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে সড়কের জরিপকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত মো,কায়েস জানান, এ সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। ড্রাইভাররা স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাতে পারেন না। বৃষ্টি হলে পানি জমে অবস্থা আরও খারাপ হয়।রামু লাইন সার্ভিসের পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, এ সড়কটির পুরো অংশে শত শত গর্ত থাকায় গাড়ি ধীরগতিতে চালাতে হয়। সন্ধ্যা নামলেই যানবাহনে ডাকাতি হয়। বড়ঢেফা, থোয়াইঙ্গাকাটা, আর্মি ক্যাম্পের দক্ষিণ গেইট এলাকায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ওইসব স্থানে যন্ত্রাংশ ভেঙে বিকল হয়ে পড়ে গাড়ি।সড়ক ও জনপথ বিভাগ কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ূয়া জানান, ‘রামু-মরিচ্যা সড়কটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণের কষ্ট হচ্ছে। আরও মাস খানেক কষ্ট হবে।’ তিনি আরও বলেন, সড়কটি উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে আমরা ঠিকাদার পেয়ে যাব আশা করছি। ঠিকাদার পেলেই ওয়ার্ক অর্ডার তাড়াতাড়ি দেওয়া হবে।