শাহেদ মিজান, সিবিএন:
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেছেন, পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারের প্রাণকেন্দ্র হলেও কক্সবাজার শহর অনেক অবহেলিত ও পিছিয়ে আছে। এখানে দেশি-বিদেশী পর্যটকের নিত্য আগমণ এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিদেশী বড় বড় মানুষ অবস্থান করছে। সে অনুসারে কক্সবাজার শহরটি তৈরি হতে পারেনি। প্রধান সড়কসহ যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা, ভঙ্গুর ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সড়কজুড়ে ময়লার সয়লাব, খানা-খন্দে ভরা সড়ক। পৌরসভার এমন দুরাবস্থা দূর করে দেয়ার সময় এসেছে। পর্যটনের একটি শহর এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকতে পারে না। শহরের এই লজ্জাকর পরিস্থিতি দূর করতে সকলকে বেশি কথা না বলে বেশি বেশি কাজ করতে হবে।  অতিরঞ্জিত আলাপ-আলোচনা বাদ দিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করে শুধু কাজটাই করতে হবে।

সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার পৌর সভার সম্মেলন কক্ষে ব্যাক কর্তৃক আয়োজিত এক সেলাই মেশিন বিতরণ ও বস্তি উন্নয়ন সম্পর্কিত এক সভায় তিনি উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেন। ব্র্যাকের কর্মসূচী উপস্থাপনার ধীরগতি এবং মূল বিষয়ের বাইরে গিয়ে ‘অহেতুক’ বিষয় উপস্থাপনাকে ইঙ্গিত করে মেয়র মুজিবুর রহমান একথা বলেন। এসময় পৌরসভার সকল কাউন্সিলর, ব্র্যাকের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তিনি সভার মধ্যখানে অনির্ধারিত সময়ে মাইক চেয়ে নিয়ে এসব কথাগুলো বলেন।

এসময় ব্র্যাক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে মেয়র বলেন, ‘ব্র্যাক অনেক বড় সংস্থা। বিশ^জুড়ে এই সংস্থার নাম রয়েছে- এটা সকলে জানে। কিন্তু আপনারা আজকে কক্সবাজার পৌরসভার সাথে প্রোগ্রাম করছেন। আজকের প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য ও কক্সবাজারের জন্য কী করতে চান সেটাই বলুন। এছাড়া অন্য বিষয়ে বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি করছি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কক্সবাজারের মানুষের জন্য বস্তিু স্থাপন, সেলাই মেশিন বিতরণ করে আপনার ভালো কাজ করছেন- এটার জন্য আপনাদের সাধুবাদ জানাই। তবে অন্য বিষয়ে না গিয়ে নির্দিষ্ট বিষয়ে স্পষ্ট করে বক্তব্য জানান। কক্সবাজারকে শহরকে অনেক উন্নত হওয়ার দরকার ছিলো। কিন্তু সেটা পারা যায়নি। আমরা এখন অহেতুক কাজকর্ম বাদ দিয়ে কথা কম বলে কাজ করতে চাচ্ছি। আপনারাও পারলে কক্সবাজার শহরের প্রধান সমস্যা ময়লা-আবর্জনা অপসারণে আমাদের সাথে কাজ করুন। কারণ শহরে যেভাবে ময়লা সৃষ্টি হচ্ছে সে অনুসারে আমাদের সক্ষমতা নেই।’

মেয়র মুজিবুর রহমানের এই ‘সতর্কমূলক’ বক্তব্যের পর ব্র্যাক কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেন। তারা দ্রুত আউট বিষয়গুলো বাদ দিয়ে সভার মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। তখন বস্তি স্থাপন নিয়ে সঠিক তথ্য ও বিস্তারিত জানতে চান মুজিবুর রহমান। তখন প্রতিটি ওয়ার্ডভিত্তিক তথ্য পেশ করেন ব্র্যাকের কর্মকর্তারা। তথ্যগুলো দরকার হবে বলে উপস্থিত কাউন্সিলরদের সব তথ্য লিখে নিতে তাগিদ দেন তিনি। কিন্তু এক পর্যায়ে কাউন্সিলরা তথ্য টুকে নিতে গাফিলতি দেখালে মেয়র মুজিবুর রহমান অনেকটা ধমকের সুরে কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্য করে আবারো বলেন- কথা নয়, বেশি বেশি কাজ চাই। তখন কাউন্সিলরা হুড়মুড় করে খাতা-কলম নিয়ে সব তথ্য লিখতে শুরু করেন। তখন তাদের মধ্যে অতি ‘স্পিরিট’ একটা ভাব চলে আসে!