সাইফুল ইসলাম বাবুল :

অবাক হচ্ছি যদিও অবাক হওয়ার কিছু নেই।অবাক হওয়াটা আমার কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কারন
যতবার ই জীবন নিয়ে ভাবতে বসি ততোবারই অবাক হই। আর একটা প্রশ্নই মনের মাঝে আসে “জীবনটা এমন কেন ?” পরক্ষনেই ভিতর থেকে কেউ একজন উত্তর দেয় জীবনটা এমনই।

জীবন যেন চলছে ব্রেকফেল করা গাড়ির মতো। যাকে ইচ্ছা করলেই থামানো যায় না। একদিন নিজের ইচ্ছায় থেমে যাবে। যাই হোক , এইতো কয়েক বছর আগের কথা মাত্র স্কুল জীবন শেষ করে কলেজে পদার্পন করলাম ,অনেক কৌতুহল ,স্বপ্ন আর আশা নিয়ে শুরু হয়েছিলো এই নতুন কলেজ
জীবনের পথচলা। কলেজের প্রথম দিনের স্মৃতিটা আজ ও যেন ভাসছে চোখের সামনে। এছাড়াও
আরো অনেক ঘটনা বা স্মৃতি শুধু ডায়েরীর মলিন পাতায় নয় জীবনের রঙ্গিন পাতায় ও লিখা আছে।

অতীত হয়ে যাওয়া সেই সময়ে কি পেয়েছি এই কলেজ জীবনে? কিছু নতুন বই যা মাথা নষ্ট করে
যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিছু নতুন স্যারের সান্নিধ্য যাদের দেখানো পথে এই পথচলা, কিছু অপরিচিত নতুন বন্ধু আর কিছু পুরনো বন্ধুদের সাথে নতুন
করে বন্ধুত্ব যাদের ভালোবাসায় আজ সিক্ত। কিন্তু কথার ফুলঝুরিতে বিরক্ত প্রথমে তো ভালই লাগত কলেজ যেতে কিন্তু দিন যতই যায় আগ্রহ ততই কমে। কিন্তু সেই সময়ের স্মৃতি তো ভোলার নয়। প্রতিদিন কলেজ
যাওয়া ,বসে বসে কিছু স্যারের লেকচার শোনা , আবার কিছু মজাদার স্যারের ক্লাস করা ,
কিছু দুষ্ট ছেলে মেয়েদের বিরক্ত করার দৃশ্য। কোথাও কোন রোমিও জুলিয়েটের দৃশ্য , সাদা
জুতা না পরায় ছেলে মেয়েদের মাঠে লাইন করে দাড় করানোর দৃশ্য,কোনদিন সামনে বেঞ্চে বসে
অতি মনোযোগ সহকারে ক্লাস করা ,কখনো পিছনে বসে বন্ধুদের সাথে গল্পে গল্পে সময় কাটানো, নরম সরম স্যারদের ক্লাসের মধ্যে
ডিস্টার্ব করা, কখনো স্যারের ঝাড়ি খাওয়া,কখনো স্যারের উপদেশ বানী শোনা , ক্লাস বাদ
দিয়ে লাইব্রেরীতে বসে থাকা ,ক্লাস টাইমে প্রিন্সিপাল কে দেখে দৌড় দেয়া , অতিরিক্ত কড়াকড়ির সময় প্রিন্সিপাল এর চোখ ফাকি দিয়ে
পিছন দিয়ে কলেজ পালানো। কলেজ দুষ্টামি -পড়ালেখা -আড্ডা একই মালায় গাথা
এরকম আরো কিছু ছোটখাট স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

এই স্বল্প সময়ের কলেজ জীবন জুড়ে ভালই তো চলছিল। কিন্তু পরীক্ষা নামক ব্রেক এসে
থামিয়ে দেয় সেই কলেজ জীবন। কলেজ জীবন সমাপ্ত। অবাক হচ্ছি এইতো সেদিন নতুন ভাবে উদ্দীপ্ত হয়ে পথ চলা শুরু করলাম এই কলেজ জীবনের। এর মধ্যেই শেষ হয়ে গেল? আজ সেই অতীত স্মৃতির পথের একদম শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে কেবল এটাই ভাবছি পথ টা কি ছোট ছিল ! নাকি সময় সঙ্কীর্ন জীবন আলোর গতিতে ছুটে চলেছে। হয়ত দুটোই যাই হোক আমার স্কুল ও কলেজ এর সব বন্ধু এবং সহপাঠী সবার জন্য বেস্ট অফ লাক। আল্লাহ আমাদের যেন ভালো পথে রাখেন আর
ভালো কিছু দান করেন। আর কিছুনা কারন ব্রেকফেল করা গাড়ির মতো আমরাও একদিন
হারিয়ে যাব জীবনের এই পথ থেকে।