মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়িঃ
মিয়নমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অনেকেই আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে দেশের বিভিন্ন শহরে। তারা ঢাকা চট্টগ্রাম সহ বিভিন্নস্থানে গড়ে তুলছে স্থায়ী আবাস।

স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে হাতিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয় পত্র। তেমনই একজন মিয়ানমারের মংডু লম্বাঘোনা গ্রাম থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা আলমরজান।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে কয়েকমাস উখিয়ার কুতুপালংয়ের মধুর ছড়া ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়ার পর পাড়ি জমিয়েছে চট্টগ্রাম শহরে। সেখানে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে হাতিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয় পত্র। নাম বদলে হয়েছেন রোহিঙ্গা আলমরজান থেকে বাংলাদেশি মর্জিনা।

বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্রধারী রোহিঙ্গা মর্জিনার এখনো যাতায়াত আছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক হুন্ডি ও চোরাই স্বর্ণ বাণিজ্য বিস্তরের অভিযোগ।
ক্যাম্প সুত্রে জানা যায়,বাংলাদেশি নামধারী মর্জিনার ৩ মেয়ে ও ৩ ছেলের মধ্যে এক মেয়ের অবস্থান এখনো কুতুপালং ক্যাম্পে ডি ৫ এ। তার নাম সমিরা স্বামীর নাম মৌলভী ইয়াছিন। মেয়ে জামাই ইয়াছিনকে দিয়েই মর্জিনা চালিয়ে যাচ্ছে ক্যাম্প ভিক্তিক হুন্ডি ও চোরাই স্বর্ণ বানিজ্য।

মর্জিনার দেবর মধুরছড়া ক্যাম্প বাজারে বিকাশের দোকানদার রোহিঙ্গা সাইদুর জানান, তার ভাই আবু সিদ্দিক বিদেশে রয়েছে। তার ভাবী আলমরজান ৫ ভাইপো ভাইজি সহ চট্টগ্রামের কালামিয়া বাজারে ভাড়া বাসায় রয়েছে। তবে তিনি এখন মর্জিনা নামেই ক্যাম্পে পরিচিত। এক ভাইজি কুতুপালং ডি ৫ এর মৌলভী ইয়াছিনের স্ত্রী। নাম সমিরা। শুনেছি ভাবী বাংলাদেশি পরিচয় পত্র নিয়েছে।
কিভাবে নিয়েছে তা জানিনা। তবে ভাবি প্রায় সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসা যাওয়া করে। ভাইপো ইসফাতুর রহমানের নামে রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রেশন কার্ড। যার নং-১০৯২০১৭১০০৫১০৩৫৩৯। যদিও এই রেশন কার্ড দিয়ে এখন আর রেশন তোলা হয়না। এর বেশী তিনি জানাতে রাজি হননি।

জানা যায়, চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় অবস্থান করে মেয়ের জামাই ইয়াছিনের মাধ্যমে মর্জিনা গড়ে তুলেছে ক্যাম্প ভিত্তিক হুন্ডি ও চোরাই স্বর্ণ ব্যবসার সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ক্যাম্পে কোটি-কোটি টাকার হুন্ডির লেনদেনের পাশাপাশি চোরাই স্বর্ণ বাণিজ্য করে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে কোটি টাকার মালিক বনে গেছে মর্জিনা। চট্টগ্রামে নামে বেনামে রয়েছে একাধিক একাউন্ট। এ ব্যাপারে রোহিঙ্গা মর্জিনার মোবাইল নাম্বার ০১৮৭৪৪৩০২৫১ এ যোগাযোগ করলে তিনি রোহিঙ্গা স্বীকার করলেও হুন্ডি ও স্বর্ণ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব তথ্য আপনাকে কে দিয়েছে? আমি কালামিয়া বাজার আছি, নিউজ করার দরকার কি, আমি আপনার সাথে দেখা করতে চাই।
রোহিঙ্গা আলমরজান এপারে আশ্রিত রোহিঙ্গা হলেও আকামে বহু এগিয়েছে। নিরীহ সেজে এখন নানা অপকর্ম করে এখন বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়ায় কুতুপালং হয়ে চট্টগ্রাম শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ইতিপূর্বে হুন্ডির মাধমে পাঠানো ৩ লাখ টাকা আত্বসাত করেছে আলমরজান।
চট্টগ্রাম ও কুতুপালংয়ে তাদের সাথে প্রভাবশালী ও প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তিদের সাথে নাকি সখ্যতা থাকায় বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে হুন্ডি ও চোরাই স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসা। রোহিঙ্গা মা-মেয়ে কে গ্রেফতার পুর্বক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালানের অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।