সাইফুল ইসলাম বাবুল, পেকুয়া থেকে:

বিস্তৃত জমি চারদিকে সবুজের সমরোহের মধ্যে ২ একরের এক বিশাল দিঘী। এর শান বাধাঁনো ঘাটে বাঁধা দুটি প্যাডেল বোট। জলের উপরই উম্মুক্ত মঞ্চ আর দিঘীর মাঝে পানির ফোয়ারা। বাধেঁ  জুই, চামেলী, হাসনাহেনা, গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদাসহ নানা প্রজাতির ফুলের বাগান। সুবাসিত ফুলের বাগানের মাঝে মাঝে বসার বেঞ্চ। বাগান থেকেই অল্প দূরেই বইপ্রেমীদের জন্য পাঠাগার। তারই বিপরীতে কফিশপ। সামনে শিশুদের জন্য খেলার ব্যবস্থা। এর একটু দূরেই ওয়াশ রুম। চলাচলের জন্য ওয়াক ওয়ে। রাতের আধারে জলে লাল, নীল, হলুদ বেগুনী রংয়ের নীয়ন বাতি। আছে ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা।

পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ৫ একর জমিতে এমন অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ‘গ্রীণ পার্ক’ নির্মাণ  করছে উপজেলা প্রশাসন। ধীরে ধীরে এটিকে পিকনিক স্পট কিংবা পর্যটন স্পটে রুপান্তর করার পরিকল্পনাও রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফাত উল্লাহ ওয়াসিম বলেন, স্থানীয়দের পাশপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন পরিত্যক্ত জমিতে একটি ‘ অত্যাধুনিক গ্রীন পার্ক নির্মাণের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই এর এক তৃতীয়াংশ কাজ শেষ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মগনামাবাসীর ছুটি কিংবা অবসর কাটানোর জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। শিশুদের জন্যও নেই কোন কিছু।  সবকিছু পরিকল্পনায় রেখে পার্কটি নির্মাণ করছি। এখানে বিনা পয়সায় পরিবার পরিজন নিয়ে যেমন প্যাডেল বোট চালাতে পারবে দর্শনার্থীরা। তেমনি পাঠাগার, কিডস কর্ণার কিংবা ওয়াইফাই ব্যবহার করা যাবে ফ্রিতে।

বাগানের সুবাসিত ফুলের মাঝে বসে যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে তেমনি সংস্কতিমনারা চাইলেই উম্মুক্ত মঞ্চে করতে পারবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বোট চালিয়ে দিঘীর মাঝ বরাবর গেলেই ফোয়ার পানি ছুয়ে দেবে দর্শনার্থীদের। সন্ধ্যার আধারে লাল-নীল ও বেগুনী রংয়ের নীয়নবাতি আলোয় দাড়িয়ে আগতরা চুমুক দিতে পারবে গরম কফিতে।

তিনপাশে গ্রীলের সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে। দিঘীর বাধ সংস্কার ও ঘাট নির্মাণ, ১০০ মিটার, ওয়াক ওয়ে, কয়েকটি ফুলের বাগান, বসার বেঞ্চ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এজন্য এপর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।  প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক এই পার্কটি নির্মিত হচ্ছে। পার্কে বিনোদনের ব্যবস্থা যেমন রয়েছে তেমনি শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে পাঠাগার। ওয়াইফাই সুবিধা আর সাংস্কৃতিক কর্মীদের জন্য রয়েছে দিঘীর উপর উন্মুক্ত প্লাটফর্ম। শিশুদের জন্য থাকবে দোলনা ও স্লিপার কর্ণার।

প্রাথমিকভাবে পার্কে প্রবেশ কিংবা রাইডস ব্যবহারের জন্য কোন মূল্য দিতে হবে না। সবকিকছুই ফ্রিতে ব্যবহার করা যাবে। এদিকে গ্রীন পার্ক নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই এটি দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। ছুটির দিনে কিংবা বিকেলের অবসরে কিংবা নিয়ন বাতির আলোর প্রতিনিয়ত আড্ডা জমাচ্ছে মগনামাবাসীসহ আশেপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজন।

কবে নাগাদ এর কাজ শেষ হবে এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, দখলদার উচ্ছেদসহ পার্কটির কাজ শেষ করতে আরো কয়েক লক্ষ টাকার দরকার। আগামী বাজেট থেকে এই কাজের জন্য আরো ৪ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর আগে জেলা প্রশাসককে একদিন মগনামায় দাওয়াত দিয়ে আনব। সেসময় তার কাছে অনুরোধ করব অবৈধ দখলকারীদের যেন উচ্ছেদ করা হয়। দখল মুক্ত হওয়ার মাস দুয়েকের মধ্যেই সমস্ত কাজ শেষ করা হবে।