হালিম মোঃ জয়:
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, ‘আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিব!’
কিন্তু তিনি আরো বলেছিলেন, ‘যে যে বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছে সে সেই বিষয়ে শিক্ষিত, কাজেই সবাই শিক্ষিত!’
কিন্তু আমাদের সমস্যা হলো কেউ গ্রাজুয়েট না হলে আমরা তাকে শিক্ষিত বলতে নারাজ। আপনি যে কাজ করুন না কেনো তা যদি ভালোভাবে সম্পাদন করতে পারেন তাহলে আপনি শিক্ষিত!
এক জেলের নৌকায় একবার শিক্ষিত বাবু উঠে নাক সিঁটকিয়ে বলেছিলো ‘তোমার জীবন বৃথা, শিক্ষিত হইতে পারলা না’ তারপর কিছুক্ষণ পর নৌকা অর্ধেক ডুবে গেলো আর শিক্ষিত বাবু চিৎকার করে জেলেকে বলছে, ভাই! বাঁচাও! বাঁচাও! তখন জেলে বললো আজ আপনার শিক্ষা আপনাকে বাঁচাতে পারবে না কিন্তু আমার সাতার শিক্ষা আমাকে বাঁচিয়ে দিবে!
আমরা সার্টিফিকেটে কয়েকটা জিপিএ থাকলে নিজেদের শিক্ষিত ভাবা শুরু করি!
কোন বিষয়ের অর্ধেক জেনে কিংবা বুঝে ভাবি পৃথিবীর সব জেনে গেছি কিংবা অন্যদের দেখলে বলতে ইচ্ছে করে, ‘তুমি কচুটা জানো’
যেমন কবি বলেছিলেন ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে’ তারপর আমরা একচেটিয়া বলা শুরু করি সংসারে যদি অশান্তি হয় তার সকল দায়ভার নারীর! কেবল নারীর! কিন্তু কবি তারপরে একটি লাইন লিখেছিলেন ‘গুনবান স্বামী যদি থাকে তার সনে’ তা বেমালুন ভুলে থাকি!
সুফি কবি আল্লামা ইকবালকে শিকোয়ানা নামক গ্রন্থের একটি শব্দের জন্য এক হাজার আলেম কাফের ফতোয়া দিয়েছিলেন!
কিন্তু তারাই আবার তাকে তার পরবর্তী গ্রন্থের জন্য আলামা উপাধি দিয়েছিলেন!
‘গো-জীবন’ প্রবন্ধ লিখিয়া মীর মশাররফ হোসেন কাফের উপাধি পেয়েছিলেন অথচ তিনি কারবালার প্রান্তরের ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে ‘বিষাদ সিন্ধু’ লেখার পর আবার আস্তিক হয়ে গেলেন!
জাতীয় কবি নজরুলকে এক সময় না বুঝে না শুনে কাফের ফতোয়া দেওয়া হয়েছিলো পরে তার গজল ইসলামী সংগীত ছাড়া আমাদের আবার চলে না!
অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্কর
জগতের তামাম জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিদের যখন এত কিছু জেনেও মনে হয় ‘আসলে কিচ্ছু জানি না’ তখন আমাদের মতো সাধারণদের ভাব এমন, ‘তুই আমার চেয়ে বেশী জানোস?’
বেপারটা এমন হওয়া উচিত ছিলো, তুই আমার চেয়ে বেশী মানস্(মেনে চলা)?