ইশতিয়াক আহমেদ জয়
বাবার সাথে আমার সম্পর্ক অদ্ভুত ও অন্যরকম ছিলো।”অদ্ভুত ও অন্যরকম” বলার কারণ হলো আমাদের সমাজ ব্যবস্থা বিবেচনা করলে এই বিশেষণ না দিয়ে উপায় নাই।
আমার বাবা আমার বন্ধু ছিলেন…
২১-২২ বছর বয়সে যখন দেখেছি সব বন্ধুদের সাথে তাদের বাবার দূরত্ব তৈরি হয়েছে তখন আমি আমার বাবাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতাম আশপাশের অনেকেই এটা নিয়ে হাসাহাসি করতো।
আমার বাবা আমাকে অন্যরকম এক মুগ্ধতায় বাঁচিতে শিখিয়েছিলেন।ছাত্ররাজনীতি করতে আশেপাশের অনেক সহযোদ্ধা ও অগ্রজদের বাবা যখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সেখানে আমার বাবা আমাকে ছাত্ররাজনীতি করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন।
সত্যি কথা বলতে কি…
আমার বাবার ইচ্ছেতেই আমি ছাত্ররাজনীতি
শুরু করেছিলাম।মাঝখানে পড়াশোনা করতে লন্ডন গিয়েছিলাম। ফিরে এসে যখন ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করছিলাম তখন বাবা বললেন ব্যবসা না করে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করতে। আমি প্রথমবার বাবার ইচ্ছেতেই জেলা ছাত্রলীগের প্রার্থী হয়েছিলাম। কিন্তু সেবার হতে পারেনি ভেঙে পড়েছিলাম খুব।
বাবা আমাকে সাহস দিয়েছিলে পাশে থেকেছিলেন।শুধু বাবা হিসেবে নয় একজন ছাত্রলীগের অগ্রজ হিসেবেও।আমার বাবা ছিলেন চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের ছাত্রলীগ মনোনীত জিএস এবং ছাত্রলীগ মনোনীত ছাত্র সংসদের ভিপি।
মায়ের মৃত্যুর পর বাবা শুধুমাত্র আমার বাবা ছিলেন না,তিনি হয়ে গিয়েছিলেন আমার মা। তাই বাবার মৃত্যুর পর আমি বাবার সাথে সাথে মা’কেও হারিয়েছিলাম। বাবার মৃত্যুর শোকের সাথে যোগ হয়েছিলো মায়ের মৃত্যুর শোক।
বাবা আমাকে ভালোবাসার এক অসীম আকাশ দেখিয়েছিলেন, যেখানে শুদ্ধতাঘেরা জীবনের সুখগুলো মেঘের মতো ভাসতো। সেই আকাশ জুড়ে এখন কিসের ঘনঘটা তা লেখার মতো সাহস আমার নাই।
ভালোবাসা আর বেদনায় বেঁচে আছে আমার বাবা আমার হৃদয়ে, কখনওই তাঁর মৃত্যু নাই;
যদিও আজ ৫ সেপ্টেম্বর..
এইদিনে বাবা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন অন্য পৃথিবীতে,আমাকে অসীম শূন্যতায় ফেলে!!
বাবা তুমি ভালো আছো তো…?
ইশতিয়াক আহমেদ জয়, সভাপতি- কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।