শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:

কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে ব্যাপক মাদকের বিস্তার ঘটেছে। পুলিশের চোঁখকে ফাঁকি দিয়ে অনেকটা বাধাহীন ও নির্বিঘেœ ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের ডিলার হিসাবে পরিচিত বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। আর ডিলারদের হয়ে চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে অলিতে গলিতে ডজন খানেক বেশি সেলসম্যান মাদক খুচরা ব্যবসায়ী ও সেবীদের হাতে পৌছে দিচ্ছে। ভিন্ন কৌশলী এ মাদক ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসার ফলে বনে গেছে অঢেল অর্থের মালিক। অপরদিকে অবৈধ পন্থায় মাদক ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেলেও ধবংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে স্থানীয় যুব সমাজ। তাই এ সকল মাদক ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে না ধরতে পারলে পরবর্তী প্রজন্মের অস্তিত্ব অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলে সচেতন মহল মনে করেন।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে চৌফলদন্ডী আরএফ এফ পুলিশের কতিপয় সোর্সদের দৈনিক ভাতা প্রদানের মাধ্যমে উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীরা নিজস্ব সেলসম্যানের মাধ্যমে প্রতিদিন কয়েক হাজার পিচ ইয়াবা বিক্রি করে আসছে। পুলিশের কতিপয় সোর্সদের ম্যানেজ করার কারনে চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের মাদক ব্যবায়ীদের আইনের আওতায় আনতে পারছে না স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে মাদকের ছোবলে আক্রান্ত হয়ে ধ্বংসের দিকে ধাবিতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে দেশের ভবিষ্যত কর্ণধার স্থানীয় যুব সমাজ।

অপরদিকে দেশের ভবিষ্যত যেখানে নিজেদের সমাজ সেবায় নিয়োজিত রাখার কথা সেখানে ইয়াবার ছোবলে আক্রান্ত হয়ে মাদকের অর্থ জোগাড়ে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে। তাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ইউনিয়নের মাদক ব্যবসার লাগান টেনে ধরতে না পারলে দেশের ভবিষ্যত কর্ণধার ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে বলে সচেতন মহল মনে করেন। পরিবারের অন্যতম উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মাদকের ছোবলে আক্রান্ত হয়ে যাওয়ার ফলে অনিশ্চিত ভবিষতের কথা ভেবে আতংকের মধ্যে দিনযাপন করছে অভিভাবক মহল। এ অবস্থায় ইয়াবা গড ফাদারদের মাদক ব্যবসার লাগাম টেনে ধরাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার জন্য স্থানীয় এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর। খুচরা ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ৬নং ওয়ার্ড সিকদার পাড়া এলাকার মৃত আমির আব্বাছের দুইপুত্র দিন মোহাম্মদ ও শওকত, ৫নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মাইজ পাড়া এলাকার নুর আহমদের পুত্র একাধিক মামলার পলাতক আসামি কথিত যুবদল নেতা শাহেদ, মাইজ পাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের পুত্র আরমান, আমির হোসেনের পুত্র রাশেদুল ইসলাম রাশেল ও কবির আহমদের পুত্র রহিমুল্লাহকে আটক করতে জেলা ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

সূত্রে জানা যায়, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নটিতে অর্ধলাখ মানুষের বসবাস। আর এলাকাটি শিল্পাঞ্চল এলাকা হিসেবে জেলাবাসীর কাছে পরিচিত। নানা কারনেই এ এলাকায় মাদকের ব্যবহার বেশি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় ও আরএফএফ পুলিশের কতিপয় সোর্সদের ম্যানেজের মাধ্যমে উল্লেখিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন কয়েক হাজার পিচ ইয়াবা পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করে আসছে। সিকদার পাড়ার দিন মোহাম্মদ ও শওকত এবং মাইজপাড়া এলাকার শাহেদ একাধিক সেলসম্যানের মাধ্যমে ইয়াবার ব্যবসা চালিয়ে আসছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে চলে তাদের ইয়াবা ব্যবসা। চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের বিভিন্ন অলিগলি ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা। দীর্ঘদীন ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকার কারনে এ সকল মাদক ব্যবসায়ীরা অনেকটা বেপরোয়া গতিতে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এ সকল মাদক ব্যবসায়ীদের মাদকের ছোবলে আক্রান্ত হয়ে বিপদগামী হয়ে পড়ছে স্থানীয় তরুন সমাজ। অনিশ্চিত ভবিষতের কথা চিন্তা করে অন্ধকারের কালোমেঘ বিরাজ করছে সাধারন অভিভাবকদের মধ্যে।

এদিকে বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরার জন্য স্থানীয় সচেতন মহল একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। সচেতন মহলের প্রতিবাদ কন্ঠস্বর কিংবা ভূমিকা মাদক ব্যবসায়ীদের অদৃশ্য খুটিঁর জোড়ে অনেকটা অসহায়ত্ব বরন করার মতো মুখ বুঝে সহ্য করা ছাড়া আর কিছুই করা থাকে না। তাই এ সকল সচেতন মহলের একমাত্র ভরসা এখন আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর উপর। স্থানীয় যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার্থে অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে চৌফলদন্ডী আরএফএফ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুবেদার ইউছুপ আলী সকালের কক্সবাজারকে জানান, আমাদের দায়িত্বটা হচ্ছে শুধু মন্দির নিরাপত্তা দেওয়া। কোথাও অভিযানে গেলে থানার ওসি’র নির্দেশ লাগে। তাই আমরা সহজে কোথাও অভিযান চালাতে পারি না। সোর্সের নামে মাসোহারা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। কারন আমাদের কোন সোর্স নেই। তারপরও কোন দুষ্ট চক্র এমন কাজ করতে পারে বলে তার ধারনা।

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়া বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের উপর তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাদক ব্যবসায়ী যত বড়ই ক্ষমতাশালী হউক না কেন তাদের অস্তিত্ব মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে। সে সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দাতাদের বিরুদ্ধেও হার্ড লাইনে রয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।