নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:

পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া (এএস) সিনিয়র মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়া সুলতানা শেফা (১৩)।

পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী শেফা বরাবরই দুরন্তপনা। সদ্য কৈশোরে পা দেয়া শেফা এখনো বান্ধবীদের সাথে দলবেঁধে খেলতে যায়। কখনো বা প্রতিবেশীদের গাছে ঢিল ছুঁড়ে পেয়ারা পেড়ে খায়। বাস্তবতা কি জিনিস তা এখনো ছোঁয়নি তাকে। গত পরশুও হৈহুল্লুড় সহ নানা খেলায় মেতে থাকা শেফা জানেনা, জীবন তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। তার পরম আপনজনরা তার কাছ থেকে কি কেড়ে নিচ্ছে।

কারণ কিশোরী শেফার বিয়ে আজ ! আজ থেকে সে হতে চলে অপরের ঘরনি। যেখানে থাকবেনা তার কৈশোরের দুরন্তপনা। বড় হওয়ার বর্ণিল স্বপ্ন। কেবলই সাংসারিক বৃত্তে ঘুরবে তার জীবন। মন জুগিয়ে চলতে হবে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের।

কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থী শেফা তো স্বপ্ন ছিল আকাশছোঁয়ার। মেঘের ডানায় ভর করে শুণ্যে ভাসার। কেন হত্যা করা হলো তার রঙ্গিন এ স্বপ্ন গুলো ? হয়তো এই প্রশ্নের উত্তর একদিন ঠিকই খুঁজে ফিরবে সে নিজেই।

স্থানীয় সচেতন মহল জানায়, উজানটিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন সুতাচুরা আইয়ুব আলী পাড়া এলাকার হাজী ছাদেক আলীর কিশোরী মেয়ে সাদিয়া সুলতানা শেফার বাল্য বিয়ে দেয়ার সমস্ত আয়োজন ইতিমধ্যে শেষ করেছে তার পরিবার। আজ ৩০আগস্ট বেশ ঘটা করে দেয়া হচ্ছে তার বিয়ে।

তারা আরো জানায়, কিশোরী শেফাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে যাচ্ছে রাজাখালী ইউনিয়নের মিয়া পাড়া এলাকার হাজী আবুল কাশেম কোম্পানির ছেলে তানভীর মোঃ ছোটন (১৯)।

ছাত্রীর বাল্য বিয়ের ব্যাপারে উজানটিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া (এএস) সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মৌলানা নুরুল হক মুকছুদি বলেন, শেফা এ বিয়ে সম্মত না থাকলেও তাকে বলপূর্বক বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হচ্ছে। এ বিয়ে ঠেকাতে আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছি।

উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সাদিয়া সুলতানা শেফার দাদা আকতার আহমদকে বাল্যবিয়ের সমস্ত আয়োজন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল করিম বলেন, বাল্য বিয়েটি রুখতে আমি ইতিমধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি।