আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেয়া হবে না। সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বুধবার নরওয়ের নোবেল কমিটি জানিয়েছে, সু চির নোবেল কেড়ে নেয়া হবে না।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সোমবার জাতিসংঘের তদন্ত কমিটি জানায়, ব্যাপকহারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এই অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লেইংসহ অন্য ছয় শীর্ষ সেনা জেনারেলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

মিয়ানমার সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অং সান সু চি। ১৯৯১ সালে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে শান্তিতে নোবেল পান এই নেত্রী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে ব্যর্থ হয়েছেন সু চি। মিয়ানমার সেনাবাহীর বর্বর নির্যাতন থেকে বাঁচতে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম।

নরওয়ের নোবেল কমিটির সেক্রেটারি ওলাভ এনজোয়েলটাড বলেন, এটা মনে রাখা জরুরি যে, পদার্থ, সাহিত্য, শান্তি বা যে কোনো ক্ষেত্রেই কাউকে নোবেল দেওয়া হয় তার অতীত কোনো কাজ বা অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে।

অং সান সু চিকে ১৯৯১ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতার লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। তাছাড়া নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারের অনুমতি নেই বলেও উল্লেখ করেন ওলাভ এনজোয়েলটাড।

গত বছর নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস অ্যান্ডারসন বলেন, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর রোহিঙ্গা ইস্যুর জন্য সু চির নোবেল কেড়ে নেয়া হবে না। টেলিভিশনে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আমরা এটা করতে পারি না। একজন নোবেল বিজয়ী পুরস্কার জয়ের পর কী করছেন তার ওপর নজরদারি করা বা তার সমালোচনা করা আমাদের কাজ নয়। নিজেদের সম্মান কিভাবে অক্ষুন্ন রাখবেন তার দায়িত্ব পুরস্কার বিজয়ীদের নিজেদের ওপর।

এদিকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মধ্যে বৃহস্পতিবার নেপালে শুরু হতে যাওয়া বিমসটেক সম্মলনে অংশ নিচ্ছেন না সু চি। তার বদলে দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে জানানো হয়েছে।