ক্রীড়া ডেস্ক:
ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১ নং আমলি আদালতে জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন তার স্ত্রী সামিয়া শারমিন। আগেরদিন (রোববার) সন্ধ্যায় জাগো নিউজে এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তোলপাড় পড়ে যায়।

এরপরই জাগো নিউজে প্রকাশ হয়, মোসাদ্দেকের বক্তব্য। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ৯ দিন আগেই স্ত্রী সামিয়া শারমিনকে ডিভোর্স দিয়েছেন। এখন কেন মামলা? মোসাদ্দেকের দাবি, তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং তার ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্যই এই মামলা করা হয়েছে।

কিন্তু একদিন পর আজ (সোমবার) মোসাদ্দেকের সেই বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন, তার স্ত্রীর মামলার ১ নম্বর সাক্ষী এবং সামিয়া শারমিনের বড় ভাই মোজাম্মেল কবির। জাগো নিউজের কাছে পাঠানো এক ই-মেইল বার্তায় মোজাম্মেল কবির দাবি করেন, তারা ডিভোর্সের কথা জানেনই না। ডিভোর্স লেটারই তারা পাননি।

বরং, মোজাম্মেল কবির উল্টো দাবি করেন, পুলিশের এক এসআইয়ের মাধ্যমে তাদেরকে মিথ্যা মামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি মোসাদ্দেক সৈকত কেনির্যাতক স্বামী আখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, মোসাদ্দেকের সঙ্গে তার বোন আর সংসারই করবে না। তবে তালাকের যে আইনি প্রক্রিয়া সেটা মেনেই যেন সব কিছু করা হয়।

জাগো নিউজের কাছে পাঠানো সামিয়া শারমিনের বড় ভাই মোজাম্মেল কবিরের ই-মেইল বার্তাটি হুবহু এখানে তুলে ধরা হলো। সেই বার্তায় তিনি লিখেন, ‘বিগত ১৫ আগস্ট সৈকত তার স্ত্রীকে মারধর করে বাসা থেকে বের করে দেয়ার পর রাত ১১.৩০ মিনিটে এসআই ফারুক নামে এক পুলিশ অফিসারের মাধ্যমে আমাকে ফোন করায়। তিনি সামিয়ার নামে ভাঙচুরের মিথ্যা মামলার ব্যাপারে আমাকে ভয় দেখিয়ে পরদিন তার সাথে দেখা করতে বলেন। আমি তাকে বলি আমরা পাঁচ ভাই ময়মনসিংহের বাইরে কর্মস্থলে থাকি। ২০ তারিখের আগে ময়মনসিংহে আসা সম্ভব না।

পরদিন, ১৬ তারিখ সকাল ১১.০৮ মিনিটে আবার ফোন করে এসআই ফারুক বলে, আজকে গেলে তারা তালাকের ব্যবস্থা করবে। আমি তখন আবার অনুরোধ করে বলি ঈদের আগে, ২০ তারিখের আগে আমাদের আসা সম্ভব না, বাসায় আমার বৃদ্ধ মা ছাড়া দায়িত্বশীল কেউ নেই। তখন তিনি ২০ তারিখের আগেই তার বদলি হয়ে নতুন কর্মস্থলে চলে যেতে হবে বলে জানান। আমি তাকে বলি, সমস্যা নেই আপনার স্থলে যিনি থাকবেন উনার সাথেই আমি কথা বলবো। তিনি বলেন ঠিক আছে দেখছি। এর মাঝে কখন তালাক হলো আমরা জানি না। এমন কোনো কাগজ আমাদের হাতে পৌঁছেনি।

এসআই ফারুক সাহেবের সাথে কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড আমার কাছে আছে। প্রয়োজনে তাও উপস্থাপন করতে পারবো। এমন নির্যাতক স্বামীর সংসার আমার বোন করবে এমন চিন্তা সে আর করে না। আমার পরিবারেরও কেউ করে না। তালাক হলে তারও একটা প্রক্রিয়া আছে। বাংলাদেশের আইনে বিবাহিত স্ত্রীকে তালাক দেয়ার আইনি প্রক্রিয়া আপনারাও জানেন। ১৪ তারিখ রাতে স্ত্রী স্বামীর ঘরে রাত কাটালো আর ১৫ তারিখ মারধর করে একদিনে তালাক দিয়ে দিলো, বাংলাদেশের আইনে এমন কিছু আছে বলে আমার জানা নেই।’