ডেস্ক নিউজ:

রমরমা ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন ভারতের আসাম রাজ্যের স্বঘোষিত ‘চুমু বাবা’। নাম তার রামপ্রকাশ চৌহান। সংসারে স্বামীকে নিয়ে অশান্তি! দীর্ঘদিন ধরে সন্তান হচ্ছে না! পরকীয়ায় আসক্ত হয়েছেন স্বামী? স্বামীকে বশ করা যাচ্ছে না? কোনো চিন্তা নেই। সোজা চলে আসুন ‘চুমু বাবা’র কাছে! এক চুমুতেই কিস্তিমাত! এ ধরনের প্রচারণা চালিয়ে তিনি নারীদের ঠকিয়ে আসছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তার। অবশেষে ধরা পড়লেন পুলিশের জালে।

চুমু বাবার কাছে প্রতারণার শিকার লোকজন জানায়, সংসারের যাবতীয় সমস্যা সমাধানের এই চুমুর নাম হচ্ছে ‘চমৎকারী চুমু’। বলা হতো, এই চুমুর এমনই গুণ যে একবার চুমু বাবার কাছে গিয়ে চমৎকারী চুমু খেলেই সব সমস্যা নিমেষেই দূর হয়ে যাবে। তবে শর্ত একটাই চুমু বাবার কাছে আসতে হবে শুধু নারীদের।

ভারতের আসাম রাজ্যের মরিগাঁও জেলার ভোরালটুপ গ্রামের বাসিন্দা রামপ্রকাশ চৌহান। বয়স ত্রিশের কোঠায়। স্বঘোষিত এই অলৌকিক ক্ষমতাধর চুমু বাবা তাঁর আখড়ায় সমস্যা নিয়ে যাওয়া নারীদের জড়িয়ে ধরে চুমু দিতেন, আর তাতেই নাকি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারে আসাম পুলিশ। তারপরই অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে চুমু বাবা ও তার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই চুমুর মাহাত্ম্য ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে গ্রামের পর গ্রাম। প্রতিদিন দলে দলে নারীরা আসতে থাকে নানা সমস্যা নিয়ে চুমু বাবার ডেরায়। চুমুর মাধ্যমে নারীদের সারিয়ে তুলতে আসামের মৌরিগাঁও অঞ্চলে একটি মন্দির গড়ে তুলেছিলেন রাম প্রকাশ। একমাস আগে শুরু করা তার এই কথিত ‘পন্থা’ আসাম জুড়ে নারীদের মাঝেও সাড়া ফেলে বেশ।

শত শত বছর ধরে মৌরিগাঁও অঞ্চলে কালো জাদু নামক কুসংস্কারের প্রভাব থাকায় রাম প্রকাশের ভণ্ডামি প্রসার পেয়েছে বেশ। আধুনিক শিক্ষার প্রসার এ অঞ্চলে একদম নেই বললেই চলে। আর সন্তানের প্রসারে রাম প্রকাশের তার মায়ের অবদান ছিল খানিকটা।

মৌরিগাঁও অঞ্চলের মানুষদের বিশ্বাস স্বয়ং ‘বিষ্ণু’র কৃপা আছে তাদের উপর। আর সেই প্রভাব কাজে লাগিয়েই সাপের ওঝা থেকে শুরু করে তান্ত্রিক গুরু নামক মানুষ ঠকানো বিভিন্ন পন্থা গড়ে উঠেছে এই অঞ্চলে।

পুলিশ জানিয়েছে, রামপ্রকাশ চৌহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সমস্যা দূর করে দেয়ার নামে নারীদের জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার মাধ্যমে যৌন লালসা পূরণ করতেন তিনি।