এম.মনছুর আলম, চকরিয়া:
চকরিয়ায় উপজেলার উপকূলীয় এলাকার সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্টান বদরখালী ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে নীতিমালা লঙ্ঘন করে আইন বহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেয়ার পায়তারা অভিযোগ উঠেছে নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে। নিয়োগ কমিটি তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও নীতিমালা লঙ্ঘন করায় নিয়োগ কমিটির ও কলেজের গর্ভনিংবডির সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল হান্নান বিএ প্রার্থীদের পরীক্ষার দিন নিয়োগ কমিটির প্রতি অনাস্থা দিয়ে হল থেকে বেরিয়ে যান। ফলে আইন বহির্ভূতভাবে পরীক্ষা নেয়ায় প্রার্থীরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সলর প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হল শাখার ছাত্র শিবিরের সাবেক সাথী মুজিবুর রহমান নামের পচন্দনীয় এক প্রার্থীকে অনিয়মের মাধ্যমে কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার পায়তারায় লিপ্ত নিয়োগ কমিটি বলে সূত্রে দাবী করেছে। এ নিয়ে এলাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করেছে।

বদরখালী ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রার্থী মোহাম্মদ আলতাফ হোছাইন জানান, গত ২১ জানুয়ারী তারিখের দৈনিক সমকাল পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ পদে তিনিসহ ১১ জন প্রার্থী যথা নিয়মে নিয়োগ কমিটির কাছে আবেদন পাঠান। কিন্ত দীর্ঘ ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে পরীক্ষা নেয়নি নিয়োগ কমিটি। ইতিমধ্যে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা প্রকাশিত হবার পর পূনরায় দৈনিক সমকাল পত্রিকায় গত ২৯ জুলাই নতুন নীতিমালা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা ২০১৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে নতুনভাবে আবেদন আহবান করেন এবং পূর্বের আবেদন সমূহ বহাল রাখেন।সে হিসেবে প্রথম পর্যায়ে ১১জন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ২জন প্রার্থীর আবেদন জমা পড়েন। কিন্তু ২ দফায় ১৩ জনের আবেদন জমা পড়লেও রহস্যজনক কারণে ৯জনের আবেদন নাকজ করে ৪জনের আবেদনকে প্রধান্য দিয়ে ওই চারজনকে ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করে ১৬ আগষ্ট চকরিয়া মহিলা কলেজের হলরুমে নিয়োগ পরীক্ষা নেন। এতে তিনিসহ ৯জন প্রার্থী বাদ দেয়ায হতাশ হয়ে পড়েন। ১৩ জন আবেদকারীর মধ্যে যোগ্যতা থাকলেও রহস্যজনক কারণে ৯ জনকে ইন্টারভিউ কার্ড না দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণে সুযোগ না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে নিয়োগ কমিটির সদস্য ও কলেজের গর্ভনিংবডির সদস্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরের প্রতিনিধি বদরখালী সমবায় কৃষিও উপনিবেশ সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল হান্নান বিএ নিয়োগ কমিটি বয়কট করে হল থেকে বেরিয়ে যান। অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রার্থী মোহাম্মদ এমরান চৌধুরী, মঈন উদ্দিনসহ অন্যান্য প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগ কমিটি যে ৪ জনকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিয়েছে তাদের প্রত্যেকের যোগ্যতা ক্ষেত্রে নীতিমালার আলোকে আইনগত সমস্যা রয়েছে। তারা হলেন, হলেন চট্টগ্রাম হালিশহর গার্হস্থ অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জোনাব আলী। তিনি ২বছরের অধিক সময় সাসপেন্ডে রয়েছে। সাসপেন্ড ব্যক্তি আইনগতভাবে পরীক্ষা দেয়ার কোন বিধান নেই। চট্টগ্রাম মোহরা ছাফা মোতালেব কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফরিদও ইনডেক্স ও এমপিও বিহীন হওয়ায় পরীক্ষা দেয়ায় বিধি সন্মত হয়নি। অপরজন কক্সবাজার জেলার মহেশখালী আলমগীর ফরিদ টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান।এ প্রার্থীর পূর্নাঙ্গ অধ্যক্ষের স্কেল নেই।বর্তমানে তিনি সহকারী অধ্যপকের স্কেল ভোগ করেন। সেহেতু তিনিও অধ্যক্ষ হিসেবে প্রার্থী হতে পারে না।এ ছাড়া অপর প্রার্থী চট্টগ্রাম লোহাগাড়া আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান কলেজের উপাধ্যক্ষ হেছামুল হক। উক্ত প্রার্থীর একটিতে রয়েছে ৩য় বিভাগ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা ২০১৫ অনুসারে সকল পাশের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২য় বিভাগ আবশ্যক। এ কারণে তিনিও প্রার্থী হতে পারেন না।নিয়োগ কমিটি রহস্যজনক কারণে নামে মাত্র ইন্টারভিউ নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হল শাখার ছাত্র শিবিরের সাবেক সাথী মুজিবুর রহমানকে অনিয়মের মাধ্যমে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার জন্য যাবতীয় কার্যক্রম ইতিমধ্যে নিয়োগ কমিটি সম্পন্ন করেছে বলে দাবী করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক,পরিচালনা কমিটির সদস্য, কলেজের শিক্ষানুরাগীসহ এলাকার সুশীল সমাজের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করেছে। ইন্টারভিউ কার্ড না পাওয়া ৯জন প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের মধ্যে অনেকের যোগ্যতা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তাদেরকে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণে সুযোগ দেননি। ফলে উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে বিধি মোতাবেক পরীক্ষা নেয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইসচ্যান্সলর প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও কক্সবাজার সরকারী কলেজ অধ্যক্ষ ফজলুল করিম চৌধুরী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলেজের গর্ভনিংবডি ও নিয়োগ কমিটির সদস্যরা আবেদনকারী প্রার্থীদের কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করেছেন।এ নিয়ে কলেজের গর্ভনিংবডি ভাল জানবেন বলে তিনি জানান।

নিয়োগ কমিটির সদস্য ও বদরখালী কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আফছরুজ্জামান কাছে অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম বিষয়ে জানতে চাইল তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিধিমালা-২০১৫ অনুসারে এবং বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্টান (স্কুল ও কলেজ)এর জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমলা ২০১৮ এ দুটির সমন্বয়ে পরীক্ষার্থীর যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাচাই ও পর্যালোচনা করে মূলত চারজন প্রার্থীকে ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করা হয়েছিল। অনিয়মের মাধ্যমে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হচ্চে বিষয়টি সঠিক নয় বলে তিনি জানায়।