বেলাল আজাদ, আদালত প্রতিবেদক :

উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সমূদ্র উপকূলীয় মোঃ শফির বিল পাটুয়ারটেক গ্রামে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে সুপারী গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে দেবর-ভাসুরেরা এক প্রবাসীর স্ত্রীকে রাতভর নির্মম ভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে , গত ১৬ আগষ্ট নির্যাতিত গৃহবধু স্থানীয় হামিদুর রহমানের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী বদি আলমের স্ত্রী নুর আয়েশা (৩০) কে তার লম্পট দেবর হামিদুর রহমানের অপর ছেলে মোঃ আলম (৩০) ধর্ষণের উদ্দেশ্যে গভীর রাত সাড়ে ৩টায় ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে প্রবাসীর স্ত্রীর শোর-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে লম্পট মোঃ আলম পালিয়ে গিয়ে তার চাচাত ভাই একই এলাকার মৃত উবায়দুর রহমানের ছেলে খলিল আহমদ (৪০) এবং অপর দুই সহোদর ভাই হামিদুর রহমানের ছেলে মোঃ করিম (২৫) ও ইসহাক আহমদ (৪২) কে নিয়ে পূণরায় প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ঢুকে পরকীয়ার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী নুর আয়েশাকে টানা-হেচঁড়া করে ঘর থেকে বের করে ভিটের সুপারী গাছের সাথে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মারধর ও নির্যাতন শুরু করে। গাছের সাথে হাত-পা বাধাঁ প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশার উপর দেবর-ভাসুরদের এই নির্মম নির্যাতন ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত প্রকাশ্যেই চলে। এসময় আক্রান্ত নূর আয়েশা ও তার অবুঝ ৩ শিশু সন্তানের কাঁন্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠলেও ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রবাসীর স্ত্রীকে বাচাঁতে এগিয়ে আসার সাহস করেনি। এক পর্যায়ে নির্যাতিত প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশা রক্তাক্ত ও অজ্ঞান হয়ে পড়লে এবং এলাকাবাসী ক্ষোভে প্রতিরোধ-প্রতিবাদ করতে শুরু করলে ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি একই ভাবে কুমিল্লার দেবিন্ধারে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে শালিসী বৈঠকে দেবর-ভাসুর কর্তৃক এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের
ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। কুমিল্লার আলোচিত সেই প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের চেয়েও নির্মম ও বর্বর নির্যাতনের শিকার উখিয়ার পাটুয়ার টেক গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশা বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্বাবধানে আশংকা জনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশা কে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে গাছের সাথে হাত-পা বেধেঁ নির্মম নির্যাতনের বিষয়ে জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি ঢাকায় অবস্থান করায় এই বিষয়ে অবগত নন। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, এই বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া
হবে। এদিকে এঘটনায় নির্যাতিত প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশার ভাই একই ইউনিয়নের রূপপতি গ্রামের মোঃ হোছনের ছেলে আবুল শামা (৩০) বাদী হয়ে ১৯ আগষ্ট কক্সবাজারের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যূনাল-৩ এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে ট্রাইব্যূনালের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ নুর ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রতিবেদন দিতে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী এড. মোঃ নুরুল ইসলাম (নূরু), এড. মোহাম্মদ জিয়া ও রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি এড. তাপস রক্ষিত জানান, প্রবাসীর স্ত্রী নুর আয়েশাকে নির্যাতনের ঘটনাটি নির্মমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ঘটনায় ড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।