সাইফুল ইসলাম বাবুল

মাদকের টাকা জোগাড় করতে নিজ স্ত্রী, ছেলে সন্ততি এমনকি বৃদ্ধ পিতা-মাতার উপর মাদকাসক্তদের অমানষিক নির্যাতনের ভয়ানক চিত্র হরহামেশেই আমরা পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি। দেশের যুব ও শিক্ষিত শ্রেণীর কিছু অংশ আজ ভয়ানক ব্যধি মাদকে আক্রান্ত হচ্ছে। সর্বনাশা মাদক দ্রব্যের বিস্তার দেশ ও সমাজে আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগজনক। সাম্প্রতিককালে দেশে মাদকের প্রসারতা বাড়ায় সমাজেও নানা ধরনের অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

এছাড়াও মাদকের পাশাপাশি বর্তমানে সমাজ ও রাষ্ট্রে বাল্য বিয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ দুইটি সামাজিক অভিশাপ। এসব সামাজিক অভিশাপ থেকে উত্তোরণের পথ আমাদেরকেই বের করতে হবে। এ অভিশাপ থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে প্রশাসনের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নের মূল হাতিয়ার যুব সম্প্রদায়কে। বাল্য বিয়ের প্রবণতা সমাজে যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা খুবই উদ্বেগজনক। তবে ইদানিং স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপের কারণে বহু বাল্য বিয়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে অনেক কিশোরী।

বাল্য বিয়ে ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সুশীল সমাজ, সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের সদিচ্ছা থাকলে রাতারাতি সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে মাদকদ্রব্যের প্রসারতা কমিয়ে আনতে পারে। ইদানিং পুলিশ প্রশাসন বাল্য বিয়ে ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পেকুয়ার আনাচে-কানাচে যেভাবে হরেক রকম মাদক দ্রব্যের বিকিকিনি বৃদ্ধি পেয়েছিল তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন সমাজের বিশিষ্টজনেরা। সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানা পুলিশ অভিযানে নামলে বহু মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীকে গ্রেফতার করে গুড়িয়ে দেয় বহু মাদকের আস্তানা। পেকুয়া থানা পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টায় পুরো পেকুয়াকে এখন মাদকমুক্ত হিসেবে গড়ে তোলার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি সামাজিক সংগঠন মাদকের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম শুরু করেছেন তা খুবই ইতিবাচক। এভাবে দেশের প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায় যদি মাদক বিরোধী সংগঠনের জন্ম হয় এবং পুলিশ প্রশাসন যদি বাল্য বিয়ে ও মাদকের বিরুদ্বে কঠোর অবস্থানে থাকে তাহলে সেদিন বেশি দূরে নয় অচিরেই পেকুয়া তথা বাংলাদেশ বাল্য বিয়ে ও মাদকমুক্ত হবে।