ডেস্ক নিউজ:
‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ধ্বংসাত্মক রূপ দেয়ার জন্য অনেকে চেষ্টা করেছেন’- উল্লেখ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, “আপনারা অনেক ‘তথাকথিত’ দায়িত্বশীল নেতার অডিও-ভিডিও রেকর্ড শুনেছেন। এমন আরও কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতার অডিও রেকর্ড রয়েছে পুলিশের হাতে।”

শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেন, ‘কীভাবে শিক্ষার্থীদের ওই আন্দোলনে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ধ্বংসাত্মক পরিবেশ তৈরি করা হবে, সেসব তথাকথিত দায়িত্বশীল নেতার অডিওতে এগুলো উঠে এসেছে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তৃতীয় দিনে স্বার্থান্বেষী মহল প্রপাগান্ডা ছড়ান। হত্যা, ধর্ষণ ও চোখ তুলে ফেলার মতো গুজব ছড়িয়ে মিথ্যাচার করেন। আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি, গাউসিয়া-নিউ মার্কেটে স্কুলড্রেস বানানোর হিড়িক পড়ে যায়। ভুয়া আইডি কার্ডও তৈরি হয়।’

‘সাংবাদিকের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা’- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেদিনের ঘটনা দুঃখজনক। ওই ঘটনায় কেউ যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করেন আমরা মামলা নেবো। পাশাপাশি ওই ঘটনা নিয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘মানুষজনকে নামতে’ বলার একটি অডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অডিওর কথোপকথনে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কণ্ঠ বলে দাবি করা হয়। যদিও আমীর খসরু দাবি করেছেন, সেটি বানোয়াট।

অডিওটিতে কুমিল্লা থেকে ‘নওমি’ নামের একজনের সঙ্গে ‘আমীর খসরু’র কথোপকথন শোনা যায়। পরবর্তীতে ব্যারিস্টার মিনহানুর রহমান নওমিকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের পর নওমিকে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। পুলিশের অভিযোগ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ফোনালাপে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে নওমিকে তার বন্ধুবান্ধবসহ লোকজনকে নামানোর আহ্বান জানান।

১১ আগস্ট রাত পৌনে ১১টায় আমীর খসরুর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারায় এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, আমীর খসরু দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলেন। ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্যও দিয়েছেন। কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মহসিন মামলার বিষয়টি জানান।

গত ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হলে শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।

আন্দোলনের মধ্যে ওঠে নয় দফা দাবি। সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা অবতীর্ণ হয় পুলিশের ভূমিকায়; শুরু করে চালকের লাইসেন্স ও যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা। সেখানে দেখা যায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও আইন প্রণেতারাও অনেক ক্ষেত্রে আইন মানছেন না।