অতিকথন

প্রকাশ: ৮ আগস্ট, ২০১৮ ০৪:০৪

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে



আনম রফিকুর রশীদ


বেশি কথা বলে যে– বাচাল। বাচালের প্যাঁচাল কথায় অতিষ্ঠ বাঙাল।

ঢাকাইয়া এক পিচ্চি ছেলে বিএনপি’র নেতা। কথা বলে পাকাপাকা। প্রেসিডেন্ট জিয়ার নজর পড়ে তার উপর। আশকারা পেয়ে মাথায় উঠে বেগম জিয়ার। তিনি তখন তথ্য কি যোগাযোগ মন্ত্রী। তার অতিকথনের কারণে স্পীকারের অধিবেশন চালাতে ঘাম ঝরতো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সংসদে কক্ষে। বিরোধীদল তাকে ডাকতো গণ্ডগোল হুদা নামে। কথা রটে ছিল তার দলের জন্যে প্রতীক চেয়েছিলেন গমের শীষ। ভোটারেরা ধান ভেবে যেন গমের বাক্স ভরায়। বাচালেরা জনগণকে কত বোকা মনে করে!

একসময় ঢাকার এক বহুতল ভবনে ছোট একটি সাইনবোর্ড ছিলো, জাতীয় গণতন্ত্রী পার্টি’। সুরঞ্জিত নামের এক অতিরঞ্জিত কথক, সভাপতি ছিলেন সাইনবোর্ড সর্বস্ব এদলের। কথা বলতেন ফোকলা দাঁতে প্যাঁচিয়ে। ক্ষমতাসীন দলের রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিশেষ বদান্যতায়। একদিন দেখা যায়, কালো বিড়াল ধাওয়া করে ট্রেনের বগি।

না বাংলা, না ইংরেজি — জগাখিচুড়ি। কখন কোথায় কি বলতে কি বলেন, নিজেও বুঝেন না হয়তো। কেরানিও রিটায়ার্ড করেন, মন্ত্রী কেন করেন না, আমার মাথায় আসে না। অর্থ ভাণ্ডারের মালের কথা বললাম।

মাগন ঠাকুর বাংলা সাহিত্য চর্চার পৃষ্ঠপোষকতা করতেন আরাকানে। সৈয়দ আলাওলদের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশেও এক সাহিত্যমোদি প্রেসিডেন্ট কিছু কবিদেরকে প্রেষণা দিতেন। তারা সাহিত্য চর্চার চেয়ে তেল চর্চায় অধিক পারদর্শিতা দেখায়। কাককে কোকিলের গান শেখাতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়ে যান পণ্ড কবিয়াল। সকালে বলেন মালেকা বানুর গল্প, রাতে বলেন মালেকা বানু এখনও জীবিত। পল্লিবন্ধুর নামটা থাক্। ছোট লোকের মুখে বড় নাম মানায় না।

তাজমহলের রূপকার সম্রাট শাহজাহান। মমতাজের মৃত্যুর পর কাঁদতে কাঁদতে জীবন পার। বাংলাদেশে সব মেয়েই মমতাজ। বাঙালিরা নারীজাতের অকাল মৃত্যুতে তাজমহল গড়ে হৃদয়ে। ব্যতিক্রম শুধুই একজন; সম্রাটের মিতা শাহজাহান। সম্প্রতি যিনি ধান ভানতে গিয়ে গাইলেন শিবের গান।

অতিকথনে দুশমন বাড়ে, ইজ্জত কমে, জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। অতিকথনের চেয়ে চুপ থাকা শ্রেয়।