এম.আর মাহামুদ:

অবশেষে সওজের টনক নড়েছে। অসহায় মানুষগুলো কৃতজ্ঞ। সওজকে ধন্যবাদ জানাতে কৃপনতাবোধ করা যথার্থ হবেনা। বিলম্বে হলেও রাষ্ট্রীয় অর্থে মরণাপন্ন সড়কটি সংস্কার করেছে। তবে ইচ্ছা করলে বর্ষার আগে সড়কটির সংস্কার কাজ সম্পাদন করতে পারত। শুষ্ক মৌসুমে সড়কটি সংস্কার করলে জন দূর্ভোগ প্রকট আকার ধারণ করতনা বলে বিজ্ঞজনদের অভিমত। গেল জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ দিকে “যদি যেতে ইচ্ছে না হয় নরকে, টমটম নিয়ে যাবেন একবার উপজেলা সড়কে” এই শিরোনামে একটি লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়েছিলাম এবং দৈনিক দেশবিদেশ পত্রিকায়ও এই লেখাটি ছাপানো হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি; নড়ার কি দরকার। জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তাদের উন্নতমানের গাড়ী রয়েছে। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় তাদের কোমরে ঝাকুনি লাগেনা। পরে জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় গেল, শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে সড়কটির সংস্কারে কর্তৃপক্ষের নজরে আসল। গত মঙ্গলবার সড়কের সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে। যা সাধারণ পাবলিকের জন্য বড়ই মঙ্গল জনক। এখন যে কয়দিন চলে ভালভাবে যাতায়াত করা যাবে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত। তবে শেষ কথা হচ্ছে অসময়ে সম্পন্ন করা একাজ কতদিন টিকবে তা সওজই ভাল জানবে। কারণ কথায় আছে ছেড়া গেঞ্জি সেলাই করতে নেই। চর্মরোগের মলমে প্রলেপ দেয়া যায়, সামান্য উপকারও হয়, কিন্তু স্থায়ী সমাধান হয়না। অতিবর্ষনে ভারি যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকলে পুনরায় এ সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়বে। এতে কোন সন্দেহ নাই। চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা হয়ে উপজেলা সদর পর্যন্ত সড়কটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। এটা অস্বীকার করার কোন যুক্তি নেই। কারণ জাইজ্ঞা ছেড়া-ফাড়া হলে কেউ দেখেনা, প্যান্ট তো আর ছেড়া পরিধান যায়না। ঢাক-ঢোল পিঠিয়ে সড়ক জনপথ বিভাগ পুরনো মাতামুহুরী ব্রিজের উপরি অংশের খানা খন্দক ঘষা-মাঝা করে ভিটুমিন যুক্ত কংকর দিয়ে সংস্কার করেছে। অতিবর্ষণজনিত কারণে বর্তমানে ব্রিজের উপরের অংশ “যেই লাউ সেই কদু”এ পরিণত হয়েছে। মাঝখানে বিশাল অংকের সরকারী টাকা পানিতেই গেল। বিষয়টি কহনও যায়না, সহনও যায়নামত অবস্থা। আঞ্চলিক গাণের সম্রাট আমাদের উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আজাদের গানের একটি কলি “হজম গর”। আমরা ঠিকই হজম করছি। তবে আশার বানি শুনা যাচ্ছে নতুনভাবে চার লেইন বিশিষ্ট ব্রিজটি নির্মিত হবে। আল্লাহর কৃপায় বেচে থাকলে তা দেখব। তখন শরৎচন্দ্র চট্টোপদ্যায়ের ভাষায় বলব “ভগবান যে দুটি চোখ দিয়েছে তা আজই স্বার্থক” এমন মন্তব্য করা ছাড়া উপায় নেই। অপর দিকে না বললে চলেনা। চকরিয়া-বদরখালী-মহেশখালী সড়কের পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন হয়ে বদরখালী পর্যন্ত সড়কে অসংখ্য খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছে উপকূলীয় এলাকার লোকজন। এ সড়কটি চকরিয়ার উপকূলের ৭টি ইউনিয়নসহ মহেশখালী উপজেলার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। এই সড়কের ইলিশিয়া অংশে রাস্তার দুপাশে মৎস্য ঘের করার কারণে সড়কটির এ অংশ ঝুকি পূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে চিংড়ি ঘের অংশে ধারক দেওয়া নির্মাণ করা না হলে সড়কটির রক্ষা করা কঠিন হয়ে দাড়াতে পারে। যা দেখেও সড়ক জনপথ বিভাগ না দেখার ভান করছে। কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয় অধিবাসীদের আকুতি একটি- “সময়ের একফুড়, অসময়ের দশফুড়” এ সুত্রটি স্মরণ রেখে যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে দুটি উপজেলার উপকূলীয় অংশের লোকজন উপকৃত হবে।