শাহেদ মিজান, সিবিএন:
এক যুগ আগে সংঘটিত কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালীতে হাফেজ নুর মুহাম্মদ হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল ইসলাম এ রায় দেন। নিহত হাফেজ নুর মুহাম্মদ সদর উপজেলার পোকখালীর পূর্ব নাইক্ষংদিয়ার এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে।

দ-প্রাপ্তরা হলেন- কক্সবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম মোহনভিলার মকবুল আহমদের ছেলে মো. ইসমাইল ও নুর আহমদের ছেলে বেলাল উদ্দিন। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

আদালত সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে সদর উপজেলার পোকখালীতে হাফেজ নুর মুহাম্মদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের চাচা ছাবের আহমদ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুইজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। সেই থেকে গত ৫ বছর ধরে বেলাল ওমানে ও ইসমাইল সৌদি আরব পালিয়ে রয়েছেন।

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আইনজীবী মমতাজ আহমদ বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। দীর্ঘ ১২ বছর পর ওই হত্যার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

নিহত নুর মুহাম্মদের চাচা ও পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদের নাইক্ষংদিয়া এলাকার মেম্বার মুহাম্মদ আলম জানান, ২০০৬ সালে অপরাধ কর্মের অভিযোগে এক মামলায় ঘাতক ইসমাইলের এক ভাইকে আটক করে পুলিশ। নিয়ে যাওয়ার সময় শনাক্তকারী হিসেবে সাক্ষীর স্বাক্ষর নেন মাদরাসা ছাত্র হাফেজ নুর মুহাম্মদ ও আনিস মুহাম্মদ টিপুর।

সেদিন রাতে দোকানে ক্রিকেট খেলা দেখতে গেলে ভাইকে শনাক্ত করার অপরাধে হাফেজ নুর মুহাম্মদকে গুলি ও টিপুকে ছুরিকাঘাত করে ঘাতক ইসমাইল ও বেলালসহ অন্যরা। তাদের দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে ঈদগাঁও এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান হাফেজ নুর মুহাম্মদ। ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু সইতে না পেরে অল্পদিন পর মারা যান নুর মুহাম্মদের মা। আর বিগত কয়েক বছর আগে মারা গেছেন মামলার বাদী নিহতের চাচা ছাবের আহমদও।

দীর্ঘ এক যুগ পর মামলার রায় পেয়ে নিহতের বাবা বয়োবৃদ্ধ আবুল খায়ের বলেন, আশা করেছিলাম আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির আদেশ হবে। এসব অপরাধীদের যাবজ্জীবন সাজা কমই মনে হচ্ছে।