ডেস্ক নিউজ:
দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ, নিরাপদ সড়ক ও ঘাতক চালকদের দ্রুত বিচার ও ফাঁসির দাবিতে গাড়ি ভাঙচুর করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

অপরদিকে, উত্তরার জসীম উদ্দীন রোডে এনা ও বুশরা পরিবহনের দুটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে গেলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দেয়।

মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় উত্তরা হাউস বিল্ডিংয়ে বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচটি বাস এবং একটি পিকআপ ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এর আগে দুপুর ১২টা থেকে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়। প্রায় কয়েকশ শিক্ষার্থীর সড়ক অবরোধের কারণে শাপলা চত্বরে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভ স্লোগানের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা একটি বাস ভাঙচুর করে।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সাইন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে সিটি কলেজ এবং ধানমন্ডি আইডিয়ালসহ বেশ কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে মিরপুর রোড, নীলক্ষেত এবং শাহবাগ থেকে সাইন্সল্যাব এলাকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের অবরোধ ভেদ করে একটি বাস সাইন্সল্যাব মোড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন বলেন, সাইন্সল্যাবে হিমাচল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। ধানমন্ডি থানা থেকে ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।

সকাল থেকে রাজধানীর ফার্মগেটের সড়কে অবরোধ করেন সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফার্মগেট ওভারব্রিজের নিচে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা কারওয়ান বাজার থেকে বিজয় সরণির দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

বেলা সাড়ে ১১টায় মিরপুর-১ নম্বর সড়কে অবস্থান নেন ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দুটি বাসে ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর চালান। এ ছাড়াও মিরপুর-১০ নম্বর চত্বরে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।

দুপুর ১টা থেকে উত্তরার কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা উত্তরার জসীম উদ্দীন মোড়ে অবরোধ করে। এ সময় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে তাদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অবরোধের ফলে উত্তরা-বিমানবন্দর সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৩টায় জসীম উদ্দীন রোড়ে উত্তরা ইউনির্ভাসিটি, মাইলস্টোন কলেজ, স্কলাসটিকাসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে এনা ও বুশরা পরিবহনের দুটি বাসে আগুন দেয়।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাসেল সিকদার জানান, জসীম উদ্দীন রোডে এনা ও বুশরা পরিবহনের দুটি বাসে শিক্ষার্থীদের আগুন দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়াসর সার্ভিসের দুটি টিম গেলেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দেয়।

উল্লেখ্য, বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় রোববার দুপুর থেকেই উত্তাল ঢাকা শহর। সোমবার ঢাকার বিভিন্ন সড়ক অবরোধের পর মঙ্গলবারও রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক নিজেদের দখলে নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

ওই ঘটনায় জাবালে নূরের তিন গাড়ির দুই চালক ও দুই হেলপারকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।