আলমগীর মাহমুদ :

বেয়াড়া বেয়াড়া ভাবে বেড়ে উঠছে প্রজন্ম। চলতে কানে ‘তার’ ডেমকেয়ার। ময় মুরুব্বি ধার ধারে না। ভাবতে দেখি’ তারাতো এনালগ জমানার অকেজো মানুষ।

গাড়িতে বন্ধু বান্ধবীর হাতে মশকারার ঢং। মোবাইল কাড়াকাড়ির দৃশ্য।ড্রেস চালচলন কাউয়া ময়ূর বনার চেষ্টা। তাঁকান যায় না– এরা কোন ধর্মের? হায়া,দয়া, মায়া হারাইল কেমনে? বুঝনত লয় না।

ছেলেটা আপনার কলেজে ফেল করায় এই ভাবনা আমারে ছেকে ধরেছে।ইউরোপ প্রবাসীরা ছেলেমেয়ে উপযুক্ত হলে ধর্মীয় সুরক্ষায় লালন, বিয়ে শাদীর প্রয়োজনে দেশে ফিরে আসতো।

সবুজেঘেরা অজপাড়া গাঁ আজ হার মানিয়েছে ইউরোপকে নষ্টতায়।এখনও মসজিদে আজান হয়,মন্দিরে বাজে ছোয়াইং এর ঘন্টা ধ্বনি,সনাতনীর কীর্তনখোলায় হয় উলুধ্বনি, লোকে লোকারণ্য কোথাও দাঁড়াবার জায়গা নেই,তারপরও কেন এই দশা?
…সুরক্ষা চাই’ অধমেরে যদি নসিহত করতেন!
কইলাম, বালির বস্তায় স্রোত আটকানো যায় না।ভাঙ্গনরোধে সে কার্যকরী তবে ব্যবস্থাটা নিতে হয় ভাঙ্গনের শুরুতে।

স্থান,কাল,পাত্র বেড়ে উঠায় প্রভাবশালী শিক্ষক। ছেলেটা যখন প্রাথমিকের প্রথম শ্রেনির ছাত্র সন্ধ্যায় পড়ার টেবিলে, তখনই পাশের বাড়ির বাজনা যন্ত্রের উচ্চ ভলিউমে প্রথম শুনে..
”বন্ধু যখন বৌ নিয়া আমার বাড়ির সামনে দিয়া,
রঙ্গ কইরা হাইট্টা যায়
বুকটা ফাইট্টা যায়”…

বাড়ি থেকে বের হতেই দেখছে খেলার সাথীর গালির আওয়াজ।
স্টেশনে দেখে হোন্ডায় বসা জন হাতে ব্রেসলেট ষ্টিলের,চুল কালার করা,গেঞ্জি জিন্স ক্যাস পরনে। সবাই তাকে আসলামু আলাইকুম আসলাম ভাই,আসসালামু আলাইকুম আসলাম ভাই বলে সালাম সন্মান দেখাচ্ছে। মনে কৌতুহল কে সে? পরে জানে এলাকার ত্রাস মুরগী আসলাম নাম।এক সময়ে মুরগী ব্যবসা করতো। বেড়ে উঠাজন দেখল ”মানুষ সালাম দেয় ক্যাডারকে ময় মুরুব্বিকে নয়”

প্রজন্ম গেল মাঠে।বাঙ্গালীর জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু।একজন মধ্যরেখার ওপারে থাকা দলকে ছড়া কেটে একদমে বৈলাকালীন অথবা ফিরে আসতে সবাই তাকে ধরে ফেলে, জোর খাটিয়ে আটকায় যতক্ষণ ছড়াকাটার দম শেষ না হয়।টারগেটে পৌঁছাতে ব্যর্থ করতে পারারাই হয় জয়ী।

খেলার অমিত্রাক্ষর ‘শিখন’ ক্রিয়া করে মনে –জয় চাও? ধরে ফেল,বাঁধা দাও,যতক্ষন দম দমে না যায়,শব্দ করার শক্তি থাকে,টারগেট ছুঁতে দিও না।’ টারগেটে পৌঁছাতে বাঁধা হয় মূল,উপভোগ হয় উপলক্ষ্য।অথচ খেলায় প্রধান হওয়া ছিল ‘উপভোগ’ ‘ Enjoy’

মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে দেখে মা’ বাবার তুমূল ঝগড়া, অকথ্য ভাষা।হুনতে হুনতে নবম শ্রেণীর ঘরে থাকা মেয়েটির মাথায় খেলে ‘এত মানসিক কষ্টের সাথে বসবাসের চেয়ে প্রত্যেকদিন যে ছেলেটা ফোনে ডিস্টার্ব করে আজ তার সাথে কথা বলে মনটারে হালকা করা যায় কিনা দেখি।ফোন দেয়া শুরু,আর পারেনি ফিরতে’
ঝগড়ার যন্ত্রণায় ছেলের ভাবনা মুরুব্বীদের মুখে শুনেছি ‘সুখটান’,। নিশ্চয় সুখের সাথে টানের একটা সম্পর্ক আছে।সুখ নিতে টান দিতে সিগেরেট কিনে। টানে টানে সুখ নিয়ে তাপ নেভাতে যেয়ে টানের কাছেই যায় হেরে। পারেনি ফিরতে…
চলবে..

লেখক ঃ বিভাগীয় প্রধান। সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,উখিয়া কলেজ কক্সবাজার।
alamgir83Cox@Gmail.com