মোঃ নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
নতুন থানা হলে “উত্তর সাতকানিয়ায়” চাই, না হলে থানার দরকার নাই এমনটাই দাবি সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়নের মানুষের। এই দাবিতে প্রতিবাদ শুরু করেছে এখানকার লোকজন। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও পোস্ট দিয়ে দাবি আদায়ে সরগম করে তুলেছেন অনেকে। সাতকানিয়ার ছয়টি ইউনিয়নের সাথে চন্দনাইশের দুটি ইউনয়ন সম্পৃক্ত করে ‘দোহাজারী-সাঙ্গু’ নামে নতুন থানা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হলে ফুঁসে উঠেন ছয় ইউনিয়নের বাসীন্দারা।
চন্দনাইশের দু’টি ইউনিয়ন বাদ দিয়ে নতুন থানা উত্তর সাতকানিয়া নামে বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার বিকালে কেরানীহাট এলাকায় মহাসড়কে মানববন্ধনের আয়োজন করন সর্বস্তরের মানুষ। একই স্থানে একই দাবিতে শনিবারও প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে সাধারণ লোকজন। সাতকানিয়ার কেওচিয়া, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরানগড়, কালিয়াইশ, ও খাগরিয়া ৬টি ইউনিয়ন ও চন্দনাইশের ২টি
ইউনিয়ন নিয়ে নতুন থানা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম-১৪ সংসদীয় আসন চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হলেও ভৌগলিক অবস্থান ও রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে পড়ে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে ছয় ইউনিয়নের মানুষ।
এই প্রস্তাবিত নতুন থানার সাথে কোনোভাবেই থাকতে চাই না ৬ ইউনিয়নের লোকজন। এ বিষয়ে পুরানগড়ের চেয়ারম্যান আ ফ ম মাহবুবুল হক সিকদার বলেন, সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়ন নিয়ে প্রস্তাবিত নতুন থানায় চন্দনাইশের দুটি ইউনিয়ন সম্পৃক্ত করে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জেনেছি। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে। এখানকার মানুষ বিষয়টি
নিয়ে নানা ভাবে প্রতিবাদ শুরু করেছেন। তিনি আরো বলেন, নতুন থানায় চন্দনাইশের দু’টি ইউনিয়ন সম্পৃক্ত করা হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তাই বিয়ষটি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারসহ
সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সাতকানিয়ার কালিয়াইশের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হাফেজ আহমদ, কেঁওচিয়ার চেয়ারম্যান মনির আহমদ, বাজালিয়ার চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত, ধর্মপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী ও খাগরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকতার হোসেনসহ আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগে বলা হয়, সাতকানিয়ার ছয়টি ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন ও প্রশাসনিক বৈষম্যের শিকার। এ অবস্থায় কালিয়াইশ, কেঁওচিয়া, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরানগড় ও খাগরিয়া ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে নতুন থানা করা
দীর্ঘদিনের দাবি। কিন্তু ছয় ইউনিয়নের সাথে চন্দনাইশের দুটি ইউনিয়ন যুক্ত করে দোহাজারি-সাঙ্গু নামে নতুন থানা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সাতকানিয়ার উত্তরাংশের ছয়টি ইউনিয়নের সাধারণ লোকজন নতুন থানা গঠনের এ প্রক্রিয়ার পক্ষে নয়। চন্দনাইশের দুটি ইউনিয়ন বাদ দিয়ে সাতকানিয়ার ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে নতুন থানা গঠন করতে হবে। সাধারণ মানুষের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য এক তরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হলে এলাকায় এলাকায় তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।
নাগরিক সমাজ সংগঠনের নেতা মো. ওচমান আলী বলেন, প্রস্তাবিত নতুন থানায় দরকার হলে সাতকানিয়া থেকে আরো কয়েকটি ইউনিয়ন যুক্ত করা হোক। কিন্তু চন্দনাইশ থেকে দু’টি ইউনিয়নকে সম্পৃক্ত করায় সাধারণ মানুষ কোনোভাবেই মানছে না। আমরা নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এবিষয়ে চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি মেনে না নিলে ৬ ইউনিয়নের বাসীন্দাদের নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।