বর্তমান পৃথিবীতে ‘ককসবাজার’ আলোচিত একটি নাম। শরণার্থীদের আশ্রয়ের কল্যানে জাতিসংঘ সহ তামাম দুনিয়ার উঁচু-নীচু পদের বহু ভিভিআইপিদের পদচারণায় মুখর নগরী। যদিও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ এই ভূমি পর্যটকদের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই সুপরিচিত এবং দ্যুতিময়।

মুজিব বদ্দা, আপনি ককসবাজারের পৌর পিতা নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণ ভালোবেসে আপনাকে ‘বদ্দা’ সম্বোধন করে৷ আপনি মুজিব বদ্দার কর্মময় পরিবেশে চঞ্চল হয়ে উঠুক পৌরসভা প্রাঙ্গণ।

পর সমাচার, বর্তমান ককসবাজার শহর দীর্ঘদিন হতে অগোছালো, আবর্জনা এবং নানা সমস্যায় জর্জরিত৷ বিশেষ করে, জলবদ্ধতার কারণে এই নগরী গুমরে কাঁদছে। অসাধারণ এই শহরটি সাধারণ বারোয়ারী একটি নগরের ন্যায় বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত। পানি সরে গেলে পাহাড়ি মাটি এবং কাঁদায় চলাচল অযোগ্য। পথচারী, শিশু কিশোর, নারী, বৃদ্ধ ও অসুস্থরা অসহায় হয়ে পড়ে।

আপনি জানেন, সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনায় একনেকে প্রকল্প পাশ করে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কয়েক হাজার কোটি টাকার কাজ শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে অচিরেই চট্টগ্রামবাসী সুফল পাবে৷ এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, প্রকল্পের প্রারম্ভে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য সার্ভে, নকশা প্রণয়ণ এবং কনসালটেন্সি করছে নেদারল্যান্ডসের একদল বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী প্যানেল।

নেদারল্যান্ডস সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে নীচুর একটি দেশ। যারা সমুদ্রকে বশ করে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কাছে উদাহরণ হয়ে আছে। যার কারণে নদীমাতৃক বাংলাদেশকে নেদারল্যান্ডসের প্রকৌশলীরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখেন৷

যেহেতু ককসবাজার স্পর্শকাতর একটি শহর, জলাবদ্ধতায় নিমগ্ন, সেহেতু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতায় নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দিয়ে প্রাক-সার্ভে করে কিভাবে এই সমস্যা হতে উত্তীর্ণ হওয়া যায়, সম্ভবত একটি সুপরিকল্পিত স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাবে৷

ককসবাজারের এক পাশে বাঁকখালী নদী। এরচেয়ে আশীর্বাদ আর হতে পারে না। অথচ শহরে কোন আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নেই।

২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টি পরিমাপ করে আগামী ৩০ বছরকে ধর্তব্য ধরে সেই পরিমাণ বৃষ্টির পানি, সাথে স্বাভাবিক পানি বিবেচনা করে ড্রেন, আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন, প্রয়োজনে নদীর সাথে ড্রেনের সংযোগস্থলে ওয়াটার টাইট রেগুলেটর এবং ওয়াটার ডিসচার্জ পাম্প বসিয়ে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।

অবহেলিত, অপরিকল্পিত, শুধু দায়িত্বের খাতিরে নগর পরিচালনা হতে বের হয়ে আসুন। ইঞ্জিনিয়ারিং মেথডে পরিকল্পিত শহরের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করুন।

আপনি ও আপনাদের জন্য শুভ কামনা।

বিনীত

তোতা মিয়া
(ইমরুল শাহেদ)
প্রকৌশলী