এম এনাম হোসেন, আরব আমিরাত প্রতিনিধি :

সংযুক্ত অারব অামিরাত প্রবাসী নারী উদ্যোক্তা হাসিনা কামাল নিজের জান ও সহায় সম্পত্তি রক্ষার জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গতকাল অামিরাতের শারজায় এক জনাকীর্ন সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় থেকে ক্রয়কৃত জমি, ভিটেবাড়ী জোর জুলুম, দখল এবং প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুশিক্ত নয়নে হাজির হন হাসিনা কামাল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘অামি অনেক কষ্টের বিনিময়ে কক্সবাজার মাতারবাড়ি এলাকায় একটি বাড়ী নির্মান করেছি কয়েক বছর পূর্বে। অামার স্বামীর মৃত্যুর পর তার দুই একজন নিকট অাত্মীয়কে এ বাড়ীর দেখভাল করার নিমিত্তে থাকতে দিয়েছি। কিন্তু এসব লোকজন এখন বাড়ীটি জবর দখল করে অামাকে বাড়ীতে যেতে বাঁধা দিচ্ছে। তারা অামাকে এবং অামার মেয়েদেরকে প্রানে মারার হুমকি দিচ্ছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রশাসনের লোকজনও এদের সঙ্গে জড়িয়ে মোটা অংকের চাদাঁ দাবী করছে। ইতিমধ্যে একটি মামলা রুজু করার জন্য অামার কাছে তিন লক্ষ টাকা চাদাঁ দাবী করছে পুলিশ। অামি মহেশখালীর ওসি প্রদিপ ও এস অাই নুরুল অামিনকে প্রায ১ লক্ষ টাকা দিয়েছি। তারা অামাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল অামার ঘর থেকে অবৈধ দখলদারীদের বের করে অামাকে ঘরটি বুঝিয়ে দিবে। কিন্তু তারা বার বার ফোন দিয়ে অামার কাছে টাকা দাবী করতে থাকে। তারা বলে কাজটি করতে হলে চট্টগ্রামের মেয়র অা জ ম নাসিরের অনুৃমতি নিতে হবে, কখনো বলেন স্থানীয় এমপির অনুমতি নিতে হবে। অামি নারী বলে অামাকে তারা নানাভাবে হয়রানী করতে থাকে।’

হাসিনা কামাল প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘অামার স্বামীর নিকট অাত্মীয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দিয়াজ হত্যাকান্ডের অাসামী মিজান অামার ঘরটা দখলের পায়তারা করে অাসামীদের প্রত্যক্ষভাবে ইন্দন দিচ্ছে। চট্টগ্রামের মেয়র সহ বিভিন্নজন এসবে জড়িত বলে প্রশাসনকে তটস্থ রেখেছে হত্যা মামলার এই অাসামী। আমার সারা জীবনের পুঁজি ও নিজের ভবিষ্যত আশ্রয়স্থল এই সম্পত্তি রক্ষা না হলে পিতৃহীন পাঁচ মেয়ে নিয়ে কোথায় গিয়ে ঠাঁই হবে ? একজন প্রবাসী হিসেবে আমার সহায় সম্পত্তি রক্ষায় আমি প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা কামালের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ভাগিনা ফরহাদুল ইসলাম। লিখিতে বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ‘হাসিনা কামালের স্বামী আলহাজ্ব কামাল হোসাইনের মৃত্যুর পর পাঁচ কন্যা সন্তানকে সে আমিরাতেই বসবাস করছে। দেশে স্থায়ী আবাসনের জন্যে কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নিজের ক্রয়কৃত জায়গার উপর তৈরি করেন দ্বিতীয় বিশিষ্ট পাকা বাড়ি ( হোল্ডিং নম্বর- ০০৩৫২)। দালান সহ ওই জমির বর্তমান মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। প্রবাসে অবস্থান করায় বাড়ি দেখাশোনায় রাখেন তত্বাবধায়ক। কিন্তু দায়িত্বে থাকা তত্বাবধায়কে একটি মহল শারীরিক ভাবে জখম করে, ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক ঘরে থেকে বের করে দিয়ে। এমনকি ঘরের গেইটের চাবি কেড়ে নিয়ে সাদা স্টামে স্বাক্ষর নিয়ে বাড়ি জবর দখল করে রাখে। জমির বিপরীতে দাবি করছে ১ কোটি টাকা। অন্যথায় জমির মালিকানা দাবি করলে হামলা ও পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকী প্রদান করে ওই সন্ত্রাসী মহল।’ এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও কোনো অগ্রগতি নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী বাংলাদেশি মিডিয়া কর্মীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হাসিনা কামালের ভাগিনা ফরহাদুল ইসলাম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার কাজী বোরহান উদ্দিন, স্থানীয় এলাকাবাসী সরোয়ার আজম প্রমুখ।