শাহেদ মিজান, সিবিএন:
কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বুধবার। গতকাল সোমবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে সব ধরণের নির্বাচনী প্রচারণা। ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার প্রস্তুত রয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই জন্য নির্র্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মাঠে নামানো হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য। আজ থেকেই নিরাপত্তা নিরাপত্তা প্রক্রিয়া শুরু হবে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হোসেন জানান, কক্সবাজার পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে ৩৯টি ভোটকেন্দ্র। সবগুলো কেন্দ্রকে আমরা স্পর্শকাতর হিসেবে নিয়েছি। নির্বাচন কমিশনও এটাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সেভাবেই আইনশৃংখলা বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা করেছেন। ইতোমধ্যে ১২ ওয়ার্ডের ৩৯টি কেন্দ্রের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসেছে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। তাদের সাথে থাকবে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ২ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর ৬টি টহলদল এবং প্রত্যেক কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৪ জন পুলিশ থাকবে। প্রতি দুইটি কেন্দ্রের জন্য একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে।
এছাড়াও আমর্ড পুলিশ ও আনসার বাহিনীসহ সব মিলে প্রায় এক হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। দরকার হলে আরো এক প্লাটুন বিজিবি দেয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ১২টি ওয়ার্ডের মোট ৩৯টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ করা হবে। ওইসব কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষ থাকবে ২২৪টি। অস্থায়ী কক্ষ থাকবে ১১টি। নির্বাচনে ৮৩ হাজার ৭২৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৪৪ হাজার ৩৭৩ জন ও নারী ভোটার রয়েছেন ৩৯ হাজার ৩৫৫ জন। ৩৯টি ভোটেকেন্দ্রে ৩৯ জন প্রিসাইডিং অফিসারের তত্ত্বাবধানে ২২৪ জন সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার ও ৪৪৮ জন পোলিং এজেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন। এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৭ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে, আজ ২৪ জুলাই দিবাগত মধ্যরাত ১২ টা থেকে ২৫ জুলাই মধ্যরাত ১২ টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় বেবী টেক্সি/অটোরিক্সা, ট্যাক্সি ক্যাব, মাইক্রোবাস, জীপ, পিকআপ, কার, বাস ট্রাক ও টেম্পো চলাচল করতে পারবে না। ভোট গ্রহণের পরদিন অর্থাৎ ২৬ জুলাই সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরী কাজে যেমন, এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উল্লেখিত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

রোববার কক্সবাজার সফরকালে জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় প্রধান অতিথি নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘সামনেই জাতীয় নির্বাচন। এই জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় সরকারের প্রতিটি নির্বাচনকেই আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা নিয়ে আমরা কক্সবাজারে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এ ক্ষেত্রে সকলের আন্তরিক সহযোগীতা প্রয়োজন।’
তিনি কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা করা দরকার তার সবই আমরা করবো। নির্বাচনে প্রায় এক হাজার জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন থাকবে। এখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে চার স্তুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজারে তপসীল ঘোষনার পর থেকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি। প্রত্যেকটি সংস্থা, প্রার্থী, জনগণ, রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আমরা সহযোগতিা পেয়ে আসছি। সকল পক্ষ যদি আন্তরিকতার সাথে আগামীকার ২৫ জুলাই পর্যন্ত সহযোগিতা করে, তাহলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমরা সুন্দর একটা নির্বাচন আমরা উপহার দিতে পারবো।’