ডেস্ক নিউজ:
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও খুলনা-গাজীপুরের মতোই ভীতিকর অবস্থায় পরিণত হয়েছে। তিন নির্বাচনী এলাকাতেই বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে গণগ্রেফতার, ভয়-ভীতি প্রদর্শন, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাধা, ধানের শীষের সমর্থক, এজেন্টদের সাদা পোশাকে তুলে নেয়া ও পরে তা অস্বীকার করার ধুম শুরু হয়েছে।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে তিন সিটির (রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট ) আসন্ন নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা খুলনা-গাজীপুরের সন্ত্রাসের আবহে নতুন মডেলের ভোট জালিয়াতির আসল রূপে আত্মপ্রকাশ করেছেন।

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী চেতনায় সাজানো প্রশাসন নির্বাচনী এলাকাগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ইউরোপে মধ্যযুগীয় ‘ডাইনি শিকার’ এর ন্যায় অভিযানে নেমেছে।’

তিন সিটিতেই সরকার দলীয় প্রার্থীরা প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। পক্ষান্তরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে। গত পরশু থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হানা দেয়া তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভোটারদের ভয় দেয়াই এই পুলিশী অভিযানের মূল লক্ষ্য।

সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে বিশ্বস্ততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়েছেন। কিন্তু খুলনা-গাজীপুরসহ চলমান সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে ঢালাও অনিয়ম ও অনাচারে সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থা তছনছ হওয়ার পরও তাদের নীরব দর্শকের ভূমিকা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও অপ্রত্যাশিত। ভোট সন্ত্রাসকে মহিমান্বিত করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ও কমিশনের বক্তব্য অভিন্ন।

তিনি বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা- কর্মচারী এবং অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের (মাস্টাররোল) জোরপূর্বক ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি দিয়ে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে। রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, তাদের বাড়িঘর ও নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, হয়রানিসহ চলছে গ্রেফতারের হিড়িক।

খালেদা জিয়ার আবারও নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসা দাবি করে রিজভী বলেন, শনিবার কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি এখনও গুরুতর অসুস্থ। তার জ্বর ও শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা কোনোভাবেই কমছে না। অসুস্থতার কারণে তিনি দোতলা থেকে নিচে নামতেই পারছেন না। তার শারীরিক সমস্যা আরও বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘বারবার ইউনাইটেড হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবি জানানো হলেও সরকার ভ্রূক্ষেপহীন ও উদাসীন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, শনিবার গণসংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের কথা বললেও যেসব গায়েবের উন্নয়ন হচ্ছে সে কথা বলেননি। যেমন বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের ২২ ক্যারেটের সোনা ১৮ ক্যারেট হয়ে যায়। জলি সোনা মিশ্র ধাতু হয়ে যায়। আবার বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে আড়াই লাখ টন কয়লা গায়েব হয়ে যায়। মূলত প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের উন্নয়ন না করলেও দলীয় নেতাকর্মীদের উন্নয়ন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এমএ মান্নান, চেয়ারপারসনে