রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রান্নায় জ্বালানির অপচয় ঠেকাতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। প্রতি পরিবারের জন্য আলাদা রান্নার বদলে সমাজভিত্তিক রান্নাঘর নির্মাণের চিন্তা করেছে সরকার।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ রবিবার সচিবালয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গাছ কেটে জালানি তৈরি করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তা রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এটা নিরসনে আমারা রোহিঙ্গাদের জন্য কমিউনিটি রান্নাঘর নির্মাণের চিন্তা করছি।’

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশের দিকে ছুটে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার আশ্রয় হয়েছে কক্সবাজারের ক্যাম্পে।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য টিলা ও গাছ কাটতে হয়েছে বিপুল সংখ্যক। পাশাপাশি উন্নত পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থা না থাকাতেও পরিবেশের দূষণ নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে।

আবার বিপুল সংখ্যক পরিবারের খাবার তৈরিও একটি বড় চিন্তা। জ্বালানি হিসেবে সেখানে ব্যবহার হচ্ছে কাঠ। স্বভাবতই আশেপাশের বিভিন্ন বৃক্ষের ওপর পড়েছে খড়্গ।

রোহিঙ্গাদেরকে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমারের টালবাহানায় যে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল গত জানুয়ারিতে, সেটি এখনও অনিশ্চিত। ফলে রোহিঙ্গারা আরও বহুদিন এখানে থাকছে এটা অনেকটাই নিশ্চিত। আর তাই বিকল্প চিন্তা করতেই হচ্ছে সরকারকে।

বনমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে আমরা ক্যাম্পগুলোতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু তা হতো বিপজ্জনক। যেকোন সময় বড় দুর্ঘটনা হতে পারে। তাই আমরা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি।’

‘আমি এ বিষয়ে সেখানে একাধিকবার পরিদর্শনে গিয়েছি। আমাদের সচিবও গিয়েছেন। সেখানে যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি না ঘটে সেজন্য আমরা সব ব্যাস্থা নেব।’

মন্ত্রী জানান, গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানে  মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের স্মৃতির সম্মানে সারাদেশে ৩০ লাখ গাছের চারা রোপন করা হবে।

এই কর্মসুচিতে সাধারণ মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নেবে বলেও আশা করেন মন্ত্রী। বলেন, এতে একসঙ্গে দুটি কাজই হয়ে যাবে। একদিনে রক্ষা পাবে পরিবেশ, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও জাগরুক থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় কাজ করছে। একটি উন্নত দেশ গঠনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০ টি বিশেষ উদ্দ্যেগের মধ্যে একটি হচ্ছে পরিবেশ সুরক্ষা। তাই আমাদের মন্ত্রণালয় এ দিকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে।’

ঢাকাটাইমস