শাহেদ মিজান, সিবিএন:
‘এবার সে স্টাইলে ভোটের প্রচার মাইকিং করা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে নির্বাচন বিধি সংস্কারের সাথে নির্বাচনী মাইকিং স্টাইলেও কী পরিববর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন?’। এই প্রশ্নটি কক্সবাজার শহরের সচেতন ভোটারের।

তিনি বলেন, ‘এবারের কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে যেভাবে মাইকিং করা হচ্ছে এরকম মাইকিং জীবনেও শুনিনি। এই মাইকিংয়ের সাথে গরুর বাজার, বলীখেলা ও ফুটপাতের ফেরিওয়ালার মাইকিংয়ের সাথে কোনো পার্থক্য নেই। একদম হুবুহু তাদের মতো। মাইকিংয়ের মারাত্মক কর্কশ ভাষার ও শব্দ কান ঝালাপালা করে ছাড়ছে। নির্বাচনী মাইকিংতো একরম হতে পারে না।’

এই লোকটি বলেন, ‘সারাজীবন দেখে এসেছি নির্বাচনী মাইকিং হয় শুদ্ধ ভাষায় শালীনতাবদ্ধ। সাথে কিছু ভদ্রভাষার গান। তাতে আঞ্চলিক গান থাকলেও তাতেও শালীনতা থাকে। কিন্তু এরকম অনিয়ন্ত্রিত ও কর্কশ ভাষার মাইকিং জীবনে শুনিনি। এটা কী দিন দিন মানুষের ভদ্রতা নিম্নদিকে যাচ্ছে তার বহি:প্রকাশ?’

জানা গেছে, আসন্ন পৌরসভার নির্বাচনের পাঁচ মেয়র প্রার্থীসহ ৮৬ প্রার্থী নানা প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রতিদিন মাইকিং করছে। এরমধ্যে মেয়র প্রার্থী ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা একাধিক গাড়ি দিয়ে মাইকিং করছে। এমনকি কিছু কিছু সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর প্রয়োজনের বাইরে গিয়ে একাধিক গাড়ি দিয়ে মাইকিং করছে। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পেরিয়েও এসব মাইকিং গাড়ি প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রধান সড়কসহ প্রতিটি অলি-গলি চাউর করছে।

অভিযোগ মতে, মাইকিংয়ের অতিরিক্ত শব্দে মানুষের কান ঝালাপালা হয়ে পড়ছে। তার সাথে বিশ্রী কথামালা আর ভাষ্যকারের ককর্শ কণ্ঠ অবস্থা আরো কাহিল হচ্ছে। মাইকিংয়ে শ্লোগান- ‘অ মারে-হালারে, অ বাপরে-ভাইরে’, ‘অমুক প্রার্থী অমুক-তমুখ’, …সহ নানা ধরণের শ্লোগান। এসবের অনেক শ্লোগান ভদ্রতার পর্যায়ে কোনোভাবেই পড়ে না। তবে সবচেয়ে মারাত্মক অবস্থা হচ্ছে- এসব শ্লোগানের স্বর নিয়ে। ভাষ্যকারদের কর্কশ শব্দ আর হেয়ালিপূর্ণ (হিহিহিহিহিহিহি) স্টাইল অত্যন্ত শ্রুতি কঠোর ঠেকছে।

পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ভোটার মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘কোরবানী গরুর বাজার, বলীখেলা ও ফেরিওয়ালার মাইকিং কত বিশ্রী হয় তা সব মানুষের জানা আছে। পৌরসভার নির্বাচনের বর্তমান যে মাইকিং হচ্ছে তা এর চেয়ে কম বিশ্রী নয়। এমনকি অনেকে মাইকিং তার চেয়েও বিশ্রী। এসম বিশ্রী শ্রুতি কঠোর মাইকিং শুনতে শুনতে শহরের মানুষ এখন চরম বিরক্ত।’

১০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সরকারি কর্মকর্তা আবদুল হামিদ বলেন, ‘কক্সবাজার শহরের বসবাসরত সব মানুষই ভোটার নয়। অন্তত ৩০শতাংশ মানুষ ভোটারের বাইরে। অন্যদিকে ভোটারসহ ৯০ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত ও ভদ্র সমাজের। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে যে বিশ্রী মাইকিং হচ্ছে কারো জন্য উপযোগী হচ্ছে না। যে ভাষায় মাইকিং হচ্ছে এটা গ্রামে-গঞ্জে হলে কিছুটা মানাতো। কিন্তু এটা শহরের অত্যন্ত বেমানান এবং বিরক্তকর। এসব বিষয় মাথায় রেখে মাইকিং করা উচিত প্রার্থীদের।’

পিটিস্কুল বাজারের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে একসাথে পাঁচটি মতো মাইকিংয়ের গাড়ি সব সময় ঘুর ঘুর করে। এতে প্রচ- শব্দ হয়। তার সাথে বিশ্রী মাইকিং স্টাইল। এতে বেচাকেনায় ব্যস্ত মানুষগুলো প্রচন্ড রকম বিরক্ত হয়।’