সংবাদদাতা :

দক্ষিণ রুমালিয়ারছরায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসীদের জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল। এলাকার মানুষদের জিম্মি করে এক শ্রেণীর সন্ত্রাসী গোষ্ঠি এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। ছুরি, ডাকাতি, খুন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে উক্ত এলাকায় গত ৫ বছরে সন্ত্রাসীরা খুন করেছে একাধিক ব্যক্তিকে। সর্বশেষ গত ২৯ শে জুন বাঁচামিয়ার ঘোনা এলাকায় সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জীবন দিতে হয় এলাকার কৃতি সন্তান তানভীরকে। এই ভাবে সন্ত্রাসীদের ধ্বংসাত্বক কর্মকান্ড মেনে নেয়া যায় না। আজ থেকে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। গত শুক্রবার দক্ষিণ রুমালিয়ারছরায় শহীদ এ.এইচ এম তানভীর স্মৃতি সংসদ উদ্ভোধনকালে বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে সন্ত্রাসীরা একের পর এক খুন ডাকাতি সহ নানা ধরণের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড ঘটায়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবী জানান এলাকাবাসী।

বক্তারা আরও বলেন কক্সবাজার সরকারী কলেজের গনীত বিভাগের মেধাবী ছাত্র শহীদ এ. এইচ এম তানভীরকে গত ২৯/০৬/২০১৮ইং রোজ শুক্রবার জুমার নামাজের পরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। সমাজকে মাদকমুক্ত ও শিক্ষিত করে তুলতে অত্র এলাকার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। চিহ্নিত সন্ত্রাসী বশর ও তার সন্ত্রাসীগ্রুপ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করার লক্ষে মেধাবী ও প্রতিবাদী তানভীরকে সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে।

গত ০৬/০৭/২০১৮ইং রোজ শুক্রবার দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর দক্ষিণ রুমালিয়ারছরার যুব ও তরুণ সমাজ, অত্র এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় “শহীদ এ. এইচ এম তানভীর স্মৃতি সংসদ”। শহীদ তানভীরের রেখে যাওয় স্বপ্ন “মাদকমুক্ত ও শিক্ষিত সুন্দর সমাজ গঠন” এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে গঠিত হয় স্মৃতি সংসদ।

অনুষ্ঠোনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ রুমালিয়ারছরার বিশিষ্ট্য ব্যক্তিরা । বক্তব্য রাখেন- ব্যরিস্টার আবুল আলা ছিদ্দিকী, ইঞ্জিনিয়ার মোতাহের হোসেন, মাওলানা শাহ আলম, শহীদ তানভীরের বড় ভাই জনাব মহসিন, আবু সিনা ও দিনুল ইসলাম বাপ্পি।

ব্যরিস্টার আবুল আলা ছিদ্দিকী তার বক্তব্যে বলেন- তানভীর ছিলেন আমাদের সকলের প্রিয় পাত্র, সমাজের একজন সচেতন ব্যক্তি, সমাজকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করতে গিয়ে আজ সে শাহাদত বরণ করেন। তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য সকলের ভূমিকা রাখতে হবে। মাদকমুক্ত সন্ত্রাসীমুক্ত সুন্দর সমাজ গঠনে সকল শ্রেণীর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।

ইঞ্জিনিয়ার মোতাহের হোসেন বলেন- আজ আমাদের প্রিয় ভাই তানভীর সন্ত্রাসীদের নির্মম আঘাতে শহীদ হয়েছেন। সুন্দর ও পরিল্পিত সমাজ গঠনে বাধার জন্য তাকে হত্যা করা হয়। শহীদ এ. এইচ এম তানভীর স্মৃতি সংসদের মাধ্যমে আমাদের এই অবহেলিত সমাজকে মার্জিত করার লক্ষে সবাইকে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। তিনি অত্র এলাকার যুব সমাজ ও সর্বস্তরের মানুষের প্রতি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

মৌলভী শাহ আলম বলেন- তানভীরের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ ও অত্র এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য সকলের সচেতন হওয়ার আহবান জানাই। কোন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম অত্র এলাকায় করতে দেওয়া হবে না মর্মে হুশিয়ারি প্রদান করেন। পরিশেষে তিনি শহীদ এ. এইচ এম তানভীরের আতœার মাগফেরাত কামনা করেন।

আলোচনা সভা শেষে বক্তারা তানভীরের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবী জানানোর মাধ্যমে সুষ্টু বিচার না পেলে অত্র এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণের সমন্বয়ে কঠোর কর্মসূচী পালনের হুশিয়ারি দেন।