নুরুল কবির বান্দরবান:

বান্দরবান পাবত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) অর্থায়নে কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কার (রক্ষণা-বেক্ষণ) কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সড়কটি সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কমদামী ইরানী বিটুমিন এবং সড়কে ১২ এম.এম সিলকোড পাথরের স্তর দিয়ে কার্পেটিং করার নিয়ম থাকলেও কাজ হচ্ছে ৭ থেকে ৮ এম.এম সিলকোডের কার্পেটিং। এছাড়াও সড়কের পাশে ড্্েরইন ও গাইড ওয়াল নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নি¤œমানের ইট। সিমেন্ট-বালির মিশ্রিত আস্তরে সিমেন্ট এর পরিমাণ কম দেয়া হচ্ছে। এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার তোফাজ্জেল হোসেন দুটি উপজেলার দায়িত্ব থাকায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সব সময় অনিয়ম থাকে এ ইঞ্জিনিয়ার।

প্রকৌশল বিভাগ ও স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) অর্থায়নে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে জারুলিয়াছড়ি স্কুলের সামনে থেকে সোনাইছড়ি পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজটি মিল্টন টেডার্স এর লাইসেন্সে বাস্তবায়ন করছেন আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কফিল উদ্দিন, বিএনপি নেতা জুলফিকার ভুট্টো’ আবু বক্কর ঠিকাদার। কার্যাদেশ অনুযায়ী সড়কটি সংস্কারে কার্পেটিং কাজে ৮০ থেকে ১০০ গ্রেডের বিটুমিন এবং ১২ এম.এম সিলকোড পাথরের স্তর দিয়ে কার্পেটিং করার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী তোফাজ্জেল হোসেন’কে ম্যানেজ করে ল্যাব টেষ্ট ছাড়ায় কমদামি ইরানী ভিটুমিন ব্যবহার করে মাত্র ৬ থেকে ৭ এম.এম সিলকোড পাথরের স্তর দিয়ে কার্পেটিং কাজটি তরিগড়ি করে শেষ করছে ঠিকাদার। ১২ ফুট প্রশস্ত রাস্তাটির সবখানে প্রশস্ত ঠিক নেই। সড়কের অধিকাংশ স্থানেই কম রয়েছে। অপরদিকে নি¤œমানের ইট এবং দেয়াল নির্মাণে (ইট-গাতুনি) সিমেন্ট এর পরিমাণ কম দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রাস্তার পানি নিস্কাসনের ড্রেইন এবং প্রতিরক্ষা দেয়াল।

সোনাইছড়ির স্থানীয় বাসিন্দার আবু তাহের ও ফয়েজ আহম্মদ’সহ অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) তত্বাবধানে এতটা নি¤œমানের কাজ এ এলাকায় আগে কখনো দেখিনি। বিশেষত বর্তমান উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের আমলেই যতসব অনিয়ম দূর্নীতিগুলো বেশি হচ্ছে। নির্মাণ এখনো শতভাগ শেষ হয়নি ।

এরি মধ্যে সড়কের সিলকোডের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে গাড়ী চাকার সঙ্গে। সড়কের পানি নিস্কাসনের জন্য তৈরি করা ড্রেইনগুলোও এবারের বর্ষায় ভেঙ্গে যাবে নি¤œমানের সামগ্রি ব্যবহার করায়। জুন মাসের ফাইনালের আগে যেনতেন ভাবে কাজটি শেষ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ঠিকাদার।

নির্মাণ কাজের ঠিকাদার কফিল উদ্দিন ও জুলফিকার ভুট্টোর সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, রাস্তার সিলকোর্ড কার্পেটিং এর কাজ প্রায় শেষ। কয়েকটি স্থানে টুকিটাকি সমস্যা হয়েছে, সেগুলো ঠিক করে দেয়া হচ্ছে। তবে সড়কের পানি নিস্কাসনের জন্য ড্রেইন তৈরির কাজটিও চলমান রয়েছে। কাজের গুনগতমান ঠিক রেখেই কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। ইরানী ভিটুমিন নয়, দেশীয় বাংলা ভিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া সড়কে ১২ এম.এম কার্পেটিং করা হচ্ছে, কোনো কম দেয়া হচ্ছেনা।

এদিকে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ইরানী বিটুমিন ব্যবহার নিষিদ্ধ নয়। ব্যবহার নিষিদ্ধ হলে’তো সরকার আমদারী বন্ধ রাখতো। কাজের গুনগতমান ঠিক রাখতে সার্বক্ষনিক পরিশ্রম করে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তবে আপনার নির্দেশেই তাহলে ইরানী বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী বলেন, আমার নির্দেশে ইরানী বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে এটি সত্য নয়। এখানে কোনো ইরানী বিটুমিন ব্যবহার করা হয়নি। আর ল্যাব টেষ্টে গ্রেড ঠিক থাকলেই’তো হয়। আর পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে কিছু কিছু স্থানে সমস্যা হয়েছে, এটি স্বাভাবিক ঘটনা। আমরা কাজের গুনগতমান ঠিক রেখেই কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।