নিজস্ব প্রতিবেদক:

২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত জেলার ৩৬ ইউনিয়নে ১ হাজার ১৯১টি মামলার আবেদন করা হয়। তার মধ্যে পুরুষ আবেদনকারী ছিল ৮১৫জন ও নারী আবেদনকারী ছিল ৩৭৬জন। শুনানি শেষে মোট ৮৬৪টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয় ২৮লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে আগের তুলনায় গ্রাম আদালতে  মামলা নিষ্পত্তির হার বেড়েছে। তাই গ্রাম আদালতের প্রতি গণমানুষের আস্থাও বেড়েছে।

২৫ জুন সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ গ্রাম আদালত (২য় পর্যায় প্রকল্প) আয়োজিত “গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা উপরোক্ত কথা বলেন। স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল আফসারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, গ্রাম আদালতের সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। যার প্রতিফলন মানুষ পাচ্ছে। গ্রাম আদালতের প্রতি মানুষ এখন অনেক সচেতন। সচেতনতা আরও বৃদ্ধিও জন্য গণমাধ্যমে ভূমিকা অপরিসীম।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গ্রাম আদালতের কমিউনিকেশন এবং আউটরিচ বিশেষজ্ঞ অর্পণা ঘোষ। প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের জেলা ফ্যাসিলিটেটর আখ্যই মং মারমা।

তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে টেকনাফ পেকুয়া ছাড়া জেলার রামুর ৬ ইউনিয়ন, উখিয়ার ৪ ইউনিয়ন, চকরিয়ার ১১ ইউনিয়ন, মহেশখালীর ৬ ইউনিয়ন, কুতুবদিয়ার ৪ ইউনিয়ন ও সদরের ৫ ইউনিয়নে সরকার গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান ১৬ ভাগ মানুষ গ্রাম আদালত সম্পর্কে সচেতন হয়েছে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৭০ ভাগ মানুষের কাছে গ্রাম আদালতের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাপক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বল্প খরচে ফৌজদারি ও দেওয়ানী মামলা গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি করা হয়। এ জন্য স্ব-স্ব ইউনিয়নে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে। ফৌজদারি আবেদন ফি ১০টাকা ও দেওয়ানী আবেদন ফি ২০ টাকা। আবেদনের পর আবেদনকারী ২জন ও প্রতিবাদকারী ২জনসহ চেয়ারম্যানকে নিয়ে একটি প্যানেল গঠন করা হয়। গঠিত প্যানেল ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করবে। তবে বিচারকার্য চলাকালীন দুর্যোগ কিংবা দুর্ঘটনার কারণে বিলম্ব হলে সেক্ষেত্রে আরও ৩০দিনসহ মোট ১২০ দিন হতে পারে মামলা নিষ্পত্তির সময়। নারী আবেদনকারী চাইলে নানা সুবিধার জন্য প্যানেলে একজন নারী সদস্য যোগ করতে পারবে।

তিনি বলেন, ১ হাজার ১৯১টি মামলার মধ্যে বিধি-৩১ এর মাধ্যমে ২৮২টি, প্রাক বিচারের মাধ্যমে ১১০টি ও শুনানীর মাধ্যমে ৭৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। সভায় সাংবাদিকরা গ্রাম আদালতের বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।