নুরুল কবির,বান্দরবান :

পার্বত্য তিন জেলার মৌজা হেডম্যান এবং কারবারী বিষয়ক ২০১৭ সালে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্ত বাতিল দাবিতে রোববার সকালে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এই তিন পার্বত্য জেলার হেডম্যান অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি প্রদানের আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও একটি মৌন মিছিলও করা হয়।

বান্দরবান জেলা বোমাং সার্কেল হেডম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিমং প্রু জানান,পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির আলোকে ১৯৯৮ সালে প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান মতে ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসনবিধিও বহাল রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বান্দরবান,রাংগামাটি এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় প্রথাগতভাবেই মৌজা হেডম্যান এবং গ্রাম প্রধান কারবারীরা তাদের এলাকার গ্রোভল্যান্ডের(তৃতীয় শ্রেণীর পাহাড়ি ভুমি)বার্ষিক ভ’মিকর আদায় করে আসছেন এবং সামাজিক বিচার-আচার নিস্পত্তি বা পরিচালনা করছেন। তারা স্থানীয়ভাবে সৃংখল পরিবেশ-পরিস্থিতি বজায় রাখাসহ সামাজিক ও সরকারের নানামুখি উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নেও সম্যক দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মৌজা হেডম্যান এবং কারবারী পদগুলো কোনভাবেই বদলীযোগ্য পদ নয় এবং মৌজা হেডম্যান ও কারবারী নিয়োগ ও পদায়ন,বরখাস্তকরণসহ যাবতীয় কাজ সম্পাদনের এখতিয়ার সার্কেল চিফ বা রাজাগণের। কিন্তু দুঃজজনক হলেও সত্যি যে, ঢাকায় ২০১৭ সালে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসকগণের দাবি অনুসারে হেডম্যান ও কারবারীদের বদলী,পদায়ন,নিয়োগদান স্থাীয়করণ এবং রাজস্বভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ফলে পার্বত্য জেলাসমুহে প্রথাগত ও কৃষ্টি,সাংস্কৃতি এবং এতিহ্যগত বিষয় বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে,ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মাঝে চাপাক্ষোভও। তা ছাড়াও পার্বত্য শান্তি চুক্তির পরিপহ্নীও বটে ওই সিদ্ধান্ত। তাই জেলা প্রশাসকদের স্থলে ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসনবিধি অক্ষুন্ন রেখে হেডম্যান,কারবারী নিয়োগ,বদলী,পদায়ন এবং স্থায়ীকরণসহ রাজস্বভুক্ত করার বিষয়ে তিন জেলার সার্কেল চিফ বা রাজাগণের ওপর আগের মত দায়িত্ব পাণরে ব্যাপারে আদেশ দাবি করা হয়।