বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার পৌর এলাকায় ভয়াবহ যানজট, জলাবদ্ধতা, যত্রতত্র আবর্জনার স্তুপ, মাদকের আস্তানা নির্মূলসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে কক্সবাজার পর্যটন শহরকে একটি বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করতে এখনই তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সূর্বণ সুযোগ বলে মনে করেন তরুণ প্রজন্মের নেতা আবদুল হান্নান সাউদ। বিশেষ করে কক্সবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কক্সবাজার শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা বড়বাজার, বাজারঘাটা, পেশকারপাড়া, নুরপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি, যানজট ও মাদকের আস্তানা গড়ে উঠার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তরুণ প্রজন্মের হালসময়ের জনপ্রিয় এ নেতা।

তিনি মনে করেন, ফি বছরই প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত বাজারঘাটা, বড়বাজার, তৎসংলগ্ন পেশকারপাড়া, নুরপাড়াসহ আশ-পাশের কয়েকটি এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা তৈরী হয়। প্রতি বছরই এসব জলাবদ্ধতায় ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। কিন্তু জলাবদ্ধতা দূরীকরণে স্থায়ী কোন সমাধান আজ পর্যন্ত কেউ গ্রহন করেনি। একই সাথে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে পুরো শহরেই। প্রধান সড়কতো আছেই, এরউপর এন্ডারশন রোড, হকার মার্কেট, বড়বাজার এলাকার প্রায় সব অলি-গলিতেও যানজটে একাকার থাকে প্রায় সময়। বাঁকখালীর পাশ ঘেঁষে বিকল্প সড়ক নির্মাণের কথা থাকলেও দীর্ঘদিনেও তা হচ্ছে না। এছাড়া বড়বাজার, মাছবাজার, চালবাজার কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে কয়েকটি মাদকের আস্তানা। সেখান থেকে সব জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে মাদক। প্রভাবশালী লোকজন ও আইনশৃংখলাবাহিনীর কিছু দুর্নীতিবাজ সদস্যের ইন্ধনে প্রকাশ্যে মাদকের বাজার বসছে সেখানে। এসব মাদকের আস্তানায় গিয়ে ধ্বংস হচ্ছে আমাদের তরুণ প্রজন্ম। এছাড়া পৌর এলাকার প্রায় সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বাঁকখালী নদীতে। এমনকি কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহি মসজিদ বদরমোকাম জামে মসজিদের আশ-পাশেও এসব ময়লা-আর্বজনা ফেলা হচ্ছে। এতে তীব্র র্দূগন্ধে মুসল্লীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে জানান প্রায় সাড়ে ৩’শ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহি বদরমোকাম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান সাউদ।

তিনি শুধু মসজিদ কমিটিই নন, এলাকায় অনেক সামাজিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথেও জড়িত। কক্সবাজার শহরের সবচেয়ে পুরনো ও অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান হিসেবে আবদুল হান্নান সাউদের রয়েছে সমান জনপ্রিয়তা। পরিচ্ছন্ন তরুণ নেতৃত্ব হিসেবে তার অবস্থান এখন ওই এলাকায় সবার উর্ধ্বে। এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যদের চাপের মুখে কক্সবাজার পৌরসভার গত নির্বাচনে ৩নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। এলাকাবাসী বিপুল সংখ্যক ভোট দিয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় এবারও পরিবারের লোকজন এবং এলাকাবাসী ৩নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করতে চাপ প্রয়োগ করছেন আবদুল হান্নান সাউদকে। সৎ, পরিচ্ছন্ন, তরুণ, কর্মঠ, বহুমুখী গুনের অধিকারী ও ঐতিহ্যবাহি পরিবারের সন্তান হওয়ায় তাঁকেই প্রার্থী হতে চাপাচাপি করা হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।

এলাকার লোকজন জানান, আবদুল হান্নান সাউদের পারিবারিক ইতিহাস ঐতিহ্যমন্ডিত। প্রায় সাড়ে ৩’শ বছরের ঐতিহ্যবাহি এই পরিবার। তাদের হাতেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ঐতিহ্যবাহি বদরমোকাম জামে মসজিদ, চেমন শমসের ইসলামিয়া মাদ্রাসা, এতিমখানা, হাফেজখানা, কস্তুরাঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এমনকি হিন্দুদের শশ্নানের জন্য জমিও দান করেছেন এই পরিবার। রয়েছে তাদের পারিবারিক কবরস্থানও। কস্তুরাঘাট-বদরমোকাম এলাকা ঘিরে তাদের রয়েছে প্রায় ২০ একরের বিশাল সাম্রাজ্য। এলাকাবাসী আরও জানান, এতো সাম্রাজ্য, বিশাল একটি ঐতিহ্যবাহি পরিবার- এরপরও মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ কোন অপরাধই তাদের স্পর্শ করতে পারেনি।

এছাড়া মরহুম জয়নুদ্দিন-শরফুদ্দিন সওদাগর, মরহুম শমসের উদ্দিন সওদাগর, আবদুর রশিদ সওদাগর, সাবেক এস.ডি.ও মরহুম এম.এ হালিম, সাবেক মহকুমা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মরহুম স.ম শামসুল হুদা চৌধুরী, মরহুম একরামুল হুদা চৌধুরী, নুরুল হুদা চৌধুরী, প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম শমসের বেলাল, রফিকুল হুদা চৌধুরী, ইকবাল মো. সামশুল হুদা টাইডেলসহ অসংখ্য গুনী ও বরেণ্য ব্যক্তিবর্গের যোগ্য উত্তরাধিকারী হলেন তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় নেতৃত্ব আবদুল হান্নান সাউদ।

এসব কারণে মূলতঃ ৩নং ওয়ার্ডে একটি আমূল পরিবর্তন আনতে আবদুল হান্নান সাউদকে আবারও কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে জোরালো চাপ দেয়া হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর ধারণা-তিনি এখনও নির্বাচন করতে রাজি না হলেও এলাকাবাসী ও পরিবারের চাপে শেষ সময়ে হলেও তিনি নির্বাচনী মাঠে নামতে বাধ্য হবেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবদুল হান্নান সাউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন করা বা কাউন্সিলর হওয়া বড় কথা নয়, সবচেয়ে বড়কথা হলো আগামী প্রজন্মের জন্য কক্সবাজারকে আমরা একটি বাসযোগ্য নগরী হিসেবে রেখে যেতে পারছি কিনা।

পৌর শহরের চারদিকে যেভাবে জলাবদ্ধতা, যানজট, মাদক, যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনার স্তুপ ছড়িয়ে পড়ছে তাতে কক্সবাজার শহর দিন দিন ক্রমশ: বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হচ্ছে। আর এ সমস্যা থেকে এখনই উত্তরণের সময়। পৌরবাসীকে অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ তাঁর নির্বাচন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন করার ব্যাপারে পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী খুব বেশি চাপাচাপি করছেন। দিন-রাত বাসায় এসে নির্বাচন করার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। দেখা যাক শেষ মুর্হুতে কি হয়।’