পিবিডি :  বর্তমান সরকার কৃষিখাতকে গতিশীল করার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে চলেছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, সরকারের কৃষি বান্ধব নীতি গ্রহণ এবং তা যথাযথ বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতি থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
মঙ্গলবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।

ন্যাপের মিসেস আমিনা আহমেদ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চাল, গম, ভুট্টাসহ সকল প্রকার ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়েছে। এর ফলে কৃষি উন্নয়নে ধারাবাহিক সফলতাও পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ বিলে শতকরা ২০ ভাগ হারে রিবেট প্রদান করেছে। ডাল, তেল, মসলা ও ভুট্টাসহ ২৪টি ফসল উৎপাদনে সরকার মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষি ঋণ প্রদান করেছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষি পণ্য রপ্তানিতে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য সরকার ২০ শতাংশ হারে ইনসেনটিভ প্রদান করছে।
মতিয়া চৌধুরী জানান, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৩৮ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হয়েছে। চাল, গম ও ভুট্টাসহ মোট কৃষি উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩৮৬ লাখ মেট্রিক টন ফসল। এরমধ্যে রয়েছে ১৩ লাখ মেট্রিক টন গম ও ৩৫ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম সালমা ইসলামের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সারা দেশে মোট আবাদযোগ্য কৃষি জমির পরিমাণ ৮৫ লাখ ৭৭ হাজার ৫৫৬ হেক্টর। মোট সেচকৃত জমির পরিমাণ ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার ১০০ হেক্টর। অর্থাৎ সেচের আওতার বাইরে কৃষি জমিসমূহ সেচের আওতায় আনার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাবার ড্যাম, ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণাগার স্থাপন, সেচ যন্ত্রপাতি সহজলভ্যকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে সেচের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর প্রশ্নের জবাবে মতিয়া চৌধুরী বলেন, কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ নিশ্চিত করার জন্য কৃষক পরিবারকে ২ কোটি ৫ লাখ ৪৪ হাজার ২০৮টি কৃষি উপকরণ কার্ড বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে কৃষকের মাঝে ১ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৭টি ও কৃষাণীর মাঝে ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৪১টি কৃষি উপকরণ কার্ড বিতরণ করা হয় এবং সরকারের বিশেষ সুবিধায় কৃষি উপকরণ কার্ডের মাধ্যমে খোলা সচল ১০ টাকার ব্যাংক একাউন্টের সংখ্যা ৯২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯০টি। যার মাধ্যমে কৃষকগণ ফসল উৎপাদনের ঋণ এবং কৃষি উপকরণ সহায়তা পেয়ে থাকেন।
সরকারি দলের সদস্য বজলুল হক হারুনের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, কৃষিতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বারি উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহ কৃষক পর্যায়ে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ই-কৃষি চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রযুক্তি সমূহের তথ্য কৃষক পর্যায়ে সহজলভ্য করার জন্য মোবাইল অ্যাপস কৃষি প্রযুক্তি ভান্ডার তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপসের মাধ্যমে বারি উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্বন্ধে কৃষকরা সহজে জানতে পারেন এবং ভোক্তাদের প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।