এস.এম রুবেল

পল্লী বিদ্যুৎ একটি শায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। তারা বিদ্যুৎ নিয়ে অামাদের সাথে ব্যবসা করছেন। অামরা ক্রেতা, তারা বিক্রেতা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাজানোর দায়িত্ব মালিকপক্ষের। কিন্তু ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অপব্যবস্থাপনার কারণে যদি কোন ক্রেতার মৃত্যু হয় তবে সেই মৃত্যুর দায় দায়িত্ব কার? নিশ্চয় মালিকপক্ষের। সেক্ষেত্রে গত ১৩ জুন ছোটমহেশখালীর ডেইল পাড়ার মমতাজ বেগম নামের এক মায়ের মৃত্যুর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দায়ী। কেননা, ইফতার পরবর্তী খাওয়া-দাওয়া শেষে পাশের বাড়িতে যাওয়ার পথে রাস্তায় পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটির তারে জড়িয়ে তাহার মৃত্যু হয়। ঝড়ো হাওয়ায় মহেশখালীতে বিদ্যুৎ এর খুঁটি সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্ষতি হয়। যখন তারা বিদ্যুৎ সংযোগ পূণরায় চালু করছেন। তবে কি বিদ্যুৎ লাইন সব স্থানে ঠিক অাছে কি না সেটা সরেজমিনে যাছাই করা উচিত নয় কি? তারা কোথাও বৈদ্যুতিক তার ছেড়া অাছে কি না যাছাই না করে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিল। আর তাতেই প্রাণ গেল এই বৃদ্ধ মায়ের। – ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত খুনের মত অপরাধ করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ অাজ সাধুর ভূমিকায় নিশ্চুপ। কেন জানেন? ঐ বৃদ্ধ মায়ের মৃত্যু তার ছেলেরা ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছে। তাই তারা এর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি। আর মহেশখালীর জনপ্রতিনিধি, শিক্ষিত সমাজ, জাতীর বিবেক, সুশীল সমাজ, কর্মকর্তা আর স্ব-গুনে দাবী করা নেতাগণ এই ঘটনা দেখেও নিশ্চুপ। নিশ্চুপ থাকা অস্বাভাবিক নয়। কারণ যে মারা গেছেন ওনি তাদের কোন অাত্মীয় নয়। ওনার মৃত্যুতে তাদের কিছু যায় অাসেনা। কিন্তু অামার নীরবতা অামাকেও ঐ অপরাধের পরোক্ষ অপরাধী করেছে।

অন্যদের করেছে কি না সেটা তাদের কাছে প্রশ্ন থেকে গেল। এবার বলা যাক কিছু নগন্য মানুষ নিয়ে গল্প। যারা ক’দিনের প্রচারণায় ক’জনের যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ এর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছিল। লাভ হয়নি কোন। কিন্তু সমালোচনা হয়েছিল যথেষ্ট। আজ যারা বিদ্যুৎ এর দাবীতে ফেসবুকে পোস্ট করে লোক দেখানো প্রতিবাদ করছেন, তারাই ঐ দিন উক্ত মানববন্ধনকে নিজেদের মাঝে তামাশায় পরিণত করেছিল। এটা এমন এক মহেশখালী যেখানে বিদ্যুৎ এর দাবীতে প্রতিবাদ করা হয়।

আবার উক্ত দাবী অাদায়ে মানববন্ধনকে তামাশার পাত্র বানানো হয়। এই লিখাটাও অযৌক্তিক। কেননা, এটা ডাস্টবিনে স্থান পাওয়ার মত অপ্রয়োজনীয় লিখনী। লিখাটি পড়ে কেউ হাসবে অার কেউ সমালোচনা করবে। কারণ অামিও সমান অপরাধী। যেহেতু অামিও অন্যদের মত নীরব ভূমিকায়। কারণ অামি ঐ সারিতে অবস্থান করছি, যারা ভোট কেন্দ্রে অনেক অাগেই তাদের অধিকার অন্যের হাতে সোপর্দ করেছে। এখন অন্য ১০ জন সাধারণ মানুষের মত অামিও পরাধীন। দুঃখ প্রকাশ ছাড়া ঐ “মা” কে দেয়ার মত কিছু নেই। অাজ যাদের হাতে ক্ষমতা, তারা ক্ষমতার অপব্যবহারে ব্যস্ত। এসব পরোক্ষ গুরুত্বর অপরাধ তাদের চোখ এড়িয়ে যায়। তাদের চিন্তা “অামি” কে নিয়ে। তারা “অামাদের” নিয়ে চিন্তা করেনা। যেদিন “অামাদের” নিয়ে ইতিবাচক চিন্তা ক্ষমতাশীলদের মনে জাগ্রত হবে, সেদিনই অামাদের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে পারে। অন্যতায় উন্নয়ন নামক অভিশাপের জোয়ারে অামরা জনসাধারণ তলিয়ে যাব।

লেখক: সংবাদকর্মী, মহেশখালী।