নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যবসায়িক টাকা আত্মসাৎ করার মামলায় জেল কাটতে হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে কক্সবাজার শহরের ১নং ওয়ার্ডের সমিতির পাড়ায় মো. নেজাম উদ্দীন (২৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে রশি দিয়ে বেঁধে রাতভর শিকল দিয়ে পেটানোর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে বুধবার সকাল তাকে পেটানো হয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দীন কুতুবদিয়া পাড়ার মৃত জাকির হোসেনের পুত্র। এসময় তার মোবাইল ফোন, ২০ হাজার টাকা, একটি খালি চেক ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। একই সাথে নির্যাতনকারীরা একটি খালি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক তার দস্তখতও নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত ব্যবসায়ী।

নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দীন জানান, তিনি মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে তিনি সমিতিরপাড়া বাজার থেকে যাওয়ার সময় তার পূর্ব পরিচিত ছলিম উল্লাহর পুত্র শাহাব উদ্দীন তাকে ফোন করে বাসিন্ন্যা পাড়ার সেলিমের বাড়িতে যেতে বলে। ফোন পেয়ে সেখানে যান নেজাম উদ্দীন। তিনি যাওয়ার ২/৩ মিনিট পর পরই সেলিমের বাড়িতে অবস্থান করা শাহাব উদ্দীন চলে যায়। শাহাব উদ্দীন চলে যাওয়ার পর নেজাম উদ্দীনকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে সেলিম। এর কিছুক্ষণ পর সেলিমের বাড়িতে যায় পুশ্চিম কুতুবদিয়ার পাড়ার মৃত আবদু শুক্কুরের পুত্র মানিক, আবদু সালামের পুত্র জাহেদ ও আবদু সাত্তারের পুত্র রিদুয়ান। তারা যাওয়ার পরপরই সেলিমসহ সবাই মিলে ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দীনকে লোহার শিকল দিয়ে পিটাতে থাকে। এময় তারা নেজামের মোবাইল ফোন, ২০ হাজার টাকা ও মানিব্যাগের থাকা ব্যবসায়িক একটি খালি চেক ছিনিয়ে নেয় এবং খালি একটি স্ট্যাম্পে দস্তখত নেয়। পরে রাত ৩টার দিকে চলে যায় মানিক, নেজাম ও রিদুয়ান। এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে যায় সেলিমও। তবে ভোরে উঠে আবার পেটাতে থাকে সেলিম।

ব্যবসী নেজাম জানান, সকাল ৯টার দিকে সেলিম মোবাইলের রেকর্ডিং চালু করে তার বাড়িতে চুরি করতে এসে ধরা পড়েছে মর্মে বক্তব্য দিতে নেজামকে বাধ্য করে। বক্তব্য রেকর্ডিংয়ের পর তাকে বাঁধা অবস্থায় চোর বলে বাইরে ঘোরাতে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুল্লাহ কোম্পানির ভাগিনা কায়সার জুয়েল ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দীনকে সেলিম হাত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। নেজামের সারা শরীরে শিকলের আঘাতে জখম হয়েছে এবং গলায় ছুরির পোছ রয়েছে

আহত নেজাম উদ্দীণ অভিযোগ করেন, মৃত আবদু শুক্কুরের পুত্র মানিক ও নেজাম উদ্দীন পার্টনারে শুটকির ব্যবসা করতেন। সে সুবাদে কোলস্টোরে রাখা প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ গোপনে বিক্রি করে দিয়ে টাকাগুলো আত্মসাৎ করে মানিক। টাকাগুলোর জন্য কয়েক দফায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় বিচার হয়। শেষে সালিশকারদের পরামর্শ মতে আদালতে মামলা করেন নেজাম। ওই মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল খেটে কয়েক দিন আগে মুক্তি পায় মানিক। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মানিক পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। নাটের গুরু মানিক। অন্যদেরকে সে ভাড়া করে এই নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে।