হুমায়ূন কবির আজাদ

বন্ধু কেমন আছ তুমি? জানি ব্যাস ভালোই আছো, কারণ ভাল থাকা তোমাদেরই মানায়। কেননা বন্ধু বান্ধবের সাথে প্রতিনিয়ত মেলামেশা করতে যা প্রয়োজন তার সব কিছুর কোনটিই কমতি নেই তোমাদের ,আর তা আমরা হাজারো চেষ্টা করেও অর্জন করতে পারিনা।
বিশ্বাস করো জীবনে একটি বার কোন এক বন্ধুর প্রতি দুর্বলতা জন্মেছিল মনে আমার আর তা তুমিই ছিলে। তখন মাত্র শৈশবকাল পেরুনোর সময় আমার, তোমার ছিল আরো কিছু কম। তোমার সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করাটা বোকামি বৈ আর কিছুই ছিলনা। কেননা কালের বিবর্তনে তোমাদের সাথে আমাদের বিস্তর পরখ হবে তা জানা ছিলনা। অথচ অবুঝ ঐ বন্ধুত্বের ভেতর আমার বিরাট এক আকাঙ্কা ছিল তবে সে কথা তোমাকে কোনদিও বুঝতে দিইনি। তোমার উচ্ছ বিলাসী হাসির মাঝে আমি সর্বদা প্রেম কুড়ানোর চেষ্টা করতাম, তােমার পায়ের নূপুরধ্বনিতে খোঁজে পেতাম কোন এক সুখের সুর। বন্ধুত্ব গাড় হবার খানিক আগে নিয়তির দ্বায়ে সেই বন্ধুকে হারিয়ে ফেলি, যা আর কোনদিনও ফিরে পাবার আশা ছিলনা। তার পর প্রকৃতির নিয়মে শৈশব পেরিয়ে কৈশোরকালও ডিঙ্গাইলাম। আর এখন প্রাপ্তবয়স্ক একজন টগবগে যুবক আমি অথচ জীবণের অতিবাহিত হওয়া এই সময়ের মধ্যে কারো প্রতি বন্ধুত্ব বা প্রেম জন্মাইনি আর। তার মূল কারণ হল আমি প্রেমের তেমনটা কাঙ্গাল ও ছিলামনা আর খুব বেশী অবিজ্ঞও ছিলামনা।
জীবণের অর্ধেক সময় অর্থাৎ পঁচিশের কাছাকাছি এসে ইন্টারনেট ফেইজবুকের কল্যাণে কোন এক সময় ধীরে ধীরে পরিচয় বাড়তে থাকে আর আমরা এক অপরের সাথে পুরোপুরি আগের ন্যায় বন্ধুত্ব স্থাপন করতেও সক্ষম হয়। হঠাৎ একদিন ঘুমের ঘোরে ফোন রিসিভ করতে অপরিচিত এক কোকিলকণ্ঠ শুনে চমকে যায় আমি। অবশ্যই বুঝেছিলাম পরিচয় গোপন রেখে অপর প্রান্ত থেকে জানতে চাওয়া হচ্ছে আমি রিনা, মীনা কোন একটি নাম ধরে কথা বলার চেষ্টা করি কিনা। আর আমি চাইবোই বা কেন? আমার তো ঐ রকম কেউ পরিচিত নেই। তারপর শুরু কথার পালা আর তা আস্তে আস্তে আরো গাড় হতে থাকে, আর তার এক পর্যায়ে তোমার পক্ষ হতে বন্ধুত্বের দাবী নিয়ে আমার কাছে একটি আবদার আসে, আর তা হল কোন একদিন আমরা কোথাও ঘুরতে যাব। অথচ আমি অধম বাস্তবতার দ্বায় নিয়ে তোমার সেই আবদার টুকুও রক্ষা করতে পারিনি।
আর সেই থেকে এখনো তুমি আমাকে ভিরু, অথবা ঝুটচোর ভাবো। ধীরে ধীরে সেই বন্ধুত্বকে পুনরায় আগের ন্যায় দূরে ঠেলে দাও, তার সবটুকুই আমি বুঝি অথচ করার কিছুই নেই। কেননা আমাদের এই সম্পূর্ণ বন্ধুত্বটুকুই কাল্পনিক ছিল যে।