এম আবুহেনা সাগর, ঈদগাঁও:  

গত তিনদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ককসবাজার সদরের বৃহৎ বানিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজারে অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্টানে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। প্রবল পানির তোড়ে গুরুত্বপূর্ণ পোকখালী যাতায়াত সড়কের জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে জন ও যান  চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাত কমছেনা। এছাড়াও বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ঈদগাঁও বাশঁঘাটা হয়ে ইসলামাবাদ যাতায়াতের দীর্ঘদিনের একমাত্র কাঠের সেতুটি। সেখানে বর্তমানে কর্মমুখী লোকজন নদীর এপার ওপার হচ্ছে নৌকা দিয়ে।

১১ জুন সকালে ভাঙ্গনকৃত এলাকা পরিদর্শনকালে প্রত্যাক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্যস্তবহুল ঈদগাঁও বাজারে গত কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে বাশঁঘাটা সড়ক,কাপড়ের গলি,তরকারী বাজারের প্রায় অর্ধশতাধিক দোকানপাঠে পানি প্রবেশ করে। এতে মালা মালের আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ব্যবসায়ীক ভরা মৌসুমে দুরদুরান্তের ক্রেতারা মার্কেটে আসতে না পারায় ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছে।

এদিকে ঈদগাঁও বাশঁঘাটা পারাপার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় আসা যাওয়ার লক্ষে নির্মিত কাঠের সেতুটি গত রাতে প্রবল পানির তোড়ে ভেসে যায়। পাশাপাশি জাহানারা বিদ্যালয়ের সামনে বিশাল অংশ ভেঙ্গে পোকখালী সড়কে বর্তমানে জন এবং যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পোকখালী ও ইসলামা বাদের প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষজন কষ্টের বিনিময়ে চলাচল করছে। সে সাথে যান চলাচল করতে না পারায় অসুস্থ লোকেরা মহা দূূভোগে পড়ছে। এটি ভাঙ্গনের ফলে ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি এবং দোকানপাঠ ভেঙ্গে যায়। স্থানীয় লোকজন বালির বস্তা দিয়ে তড়িৎ গতিতে কোনরকম রক্ষা করেছে ঢলের পানি। দ্রত সময়ে যদি এ ভাঙ্গন সংস্কার করা না হয় তাহলে আরো ব্যাপক আকারে ভাঙ্গনের আশংকা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। সে সাথে বাশঁঘাট সড়ক ও সুপারীগলি সড়কে হাটু পরিমান পানিতে সয়লাব হয়ে উঠেছে।

একদিকে ঈদগাঁও বাশঁঘাটায় চলাচলের কাঠের সেতুটি পানিতে তলিয়ে গেছে, অন্যদিকে পার্শ্ববতী স্কুল সংলগ্ন স্থানে ঈদগাঁও পোকখালী যাতায়াত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুই ইউনিয়নের অসংখ্য লোকজন বর্তমানে যাতায়াত নিয়ে নিদারুন কষ্ট পাচ্ছে। সে সাথে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব শিক্ষাঙ্গনে আসা যাওয়ায় বিপাকে পড়ছে। আবার ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নিচ তলায় প্রতিটি শ্রেনীকক্ষে পানি প্রবেশ করে। মাঠ ভর্তি পানি যেন যাওয়ার কোন ব্যবস্থায় নেই।

অপরদিকে সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ঈদগাঁওর জাগির পাড়া,জালালাবাদ সওদাগর পাড়ায় বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে। মানুষের চলাচলে দূূবিষহ যেন চোখে পড়ার মত। ঈদগাঁও ইউনিয়নের বৃহত্তর মাইজ পাড়ায় ভরাখালের উপর কতিপয় লোকজন দোকান নির্মান আর ক্ষেত্র খামারের নামে খাল দখল করার কারনে ভরাখালটি দিনদিন সংকীর্ণ হওয়ায় বৃষ্টির পানি চলাচল করতে না পারায় খালের নিকটবর্তী বাড়ীঘরের উঠানে পানিবন্ধি হয়ে পড়ে। দূর্ভোগ আর দূর্গতিতে পড়ছে মহিলারা। রান্নারকাজেও কষ্ট পাচ্ছেন বলে জানান অনেক গৃহবধু। আবার বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বৃষ্টির কারনে বিচ্ছিন্ন হওয়া বিদ্যুতের লাইন এখনো চালু হয়নি। সেসব এলাকার বাড়ীঘরে ফ্রিজে রক্ষিত খাদ্রদ্রব্য নষ্ট হয়ে পড়ছে বলে জানান ভোক্তভোগীরা।বাশঁঘাটায় ভাঙ্গনকৃত স্থানের জন্য জরুরী ভিত্তিতে ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কোন বরাদ্দ হয়েছে কিনা

জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিক জানান,এখনো হয়নি এবং বরাদ্দ হওয়ার বিষয়টিও দেখছেননা বলেও জানান। অন্যদিকে জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন জানান, ভাঙ্গনটি দ্রতগতিতে সংস্কার করা না হলে এটি আরো মহামারী আকারে রুপ লাভ করতে পারে। কারন খালের মুখস্থল হওয়ায়। স্কুলটিও হুমকির মুখে রয়েছে।