যুক্তফ্রন্ট কার?

ডেস্ক নিউজ:

অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টে থাকা না থাকা নিয়েই কি ভাঙছে বিএনপি? বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যেই এই প্রশ্ন উঠেছে। বিএনপিতে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিরোধীরা বলছেন, বিএনপি ভাঙতে সরকার যুক্তফ্রন্ট তৈরি করেছে। যুক্তফ্রন্ট দিয়ে বিএনপি ভাঙার চেষ্টা চলছে। পবিত্র রমজান মাসে দুটি ইফতার পার্টিতে যুক্তফ্রন্ট নেতা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বক্তব্যের পর প্রশ্ন উঠেছে যুক্তফ্রন্ট আসলে কার? সরকার না বিএনপির?

যদিও যুক্তফ্রন্টের নেতারা বলছেন, ‘যুক্তফ্রন্ট হলো আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বিকল্প। তৃতীয় ধারা।’ যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক এবং বিকল্প ধারার প্রধান অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা রাজনীতিতে একটি সুস্থ ধারার সূচনা করতে চাই। আমরা সব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমরা সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আমরা অপশাসনের বিরুদ্ধে।’

উল্লেখ্য, এই বছরের গোড়ার দিকে বিকল্পধারা, নাগরিক ঐক্য, আ. স. ম. আব্দুর রবের জেএসডি সহ কয়েকটি দল মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু যুক্তফ্রন্টের সকল কর্মসূচিতে এই দল দুটি থাকছে না। অবশ্য যুক্তফ্রন্টের নেতা অধ্যাপক বি. চৌধুরী দাবি করেছেন, তারা যুক্তফ্রন্টে আছে। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলে তিনি জানান।

আপাত দৃষ্টিতে যুক্তফ্রন্ট সরকারের সমালোচক। বিএনপি সরকারের যে দোষত্রুটি বা নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে কথা বলতে পারছে না, সেসব বিষয় নিয়ে সোচ্চার যুক্তফ্রন্ট। যে কারণেই বিএনপিপন্থী সুশীল সমাজ এবং বুদ্ধিজীবীরা যুক্তফ্রন্টের কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছেন।

বিএনপির নেতারাও ডাকলেই ছুটে যাচ্ছেন। বিএনপির সুরেই যুক্তফ্রন্ট অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচন কমিশন পুন:গঠনের কথাও বলছে। তাই অনেকেরই ধারণা, এটা বিএনপিরই একটি বর্ধিত অংশ। জামাতের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে যারা বিএনপির অনুষ্ঠানে যেতে আগ্রহী নন, তাঁদের জন্য এটা একটা প্ল্যাটফর্ম।

কিন্তু সরকারের লোকজনও যুক্তফ্রন্টে খুশি। আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন,‘আমরা তো সুস্থ এবং গণতান্ত্রিক বিরোধী দল চাই। যুক্তফ্রন্ট যদি শক্তিশালী হয়। সেটা দেশের গণতন্ত্রের জন্যই ইতিবাচক।’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ মনে করেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকেই যুক্তফ্রন্টের সৃষ্টি। ঐ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল। যুক্তফ্রন্ট যে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে, সেটা এই ফ্রন্টের নেতাদের কথাবার্তাতেই স্পষ্ট। তাহলে কি বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে যুক্তফ্রন্ট এই অবস্থান পূরণ করবে? যুক্তফ্রন্টে আসবে বিএনপির একটি বড় অংশ? সরকার সারাবিশ্বকে দেখাবে বিএনপি ছাড়াও অংশগ্রহণমূলক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে হবে আরও গভীরভাবে। এর সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে নির্বাচনের সময়। তখনই উত্তর মিলবে যুক্তফ্রন্ট কার?