এম মনছুর আলম, চকরিয়া :

চকরিয়ায় উপকূলীয় বদরখালীতে একদল স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা একই পরিবারের ৩ নারী-পুরুষকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে।স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।ঘটনার খবর পেয়ে বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির একটি টীম ঘটনাস্থলে পৌছলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই সন্ত্রাসীরা তাদের ব্যবহ্নত দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক ফেলে পালিয়ে যায়।পরে পুলিশ সন্ত্রাসীদের রেখে যাওয়া বন্দুকটি জব্ধ করেছে। গতকাল ২৪মে(বৃহস্পতিবার) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার বদরখালী ইউনয়নের ১নম্বর ব্লকের ডেমুশিয়া পাড়াস্থ লাল মিয়া সর্দার সড়কের রাস্তার মাথা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন,বদরখালী ডেমুশিয়া পাড়া এলাকার মৃত সিরাজ আহমদের পুত্র আবদু ছোবহান (৫৫),আবদুস ছোবহানের বিবাহিত কন্যা রুজিনা আক্তার(২৩) ও তার পুত্র মো: জিসান (১৭)।এ ঘটনায় আহত পরিবার থানায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে সুত্রে জানায়।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে,বদরখালী ইউনিয়নের ১নম্বর ব্লকস্থ জালাল মেম্বারের গংয়ে দখলীয় দাঙ্গার ঘোনা (চিংড়ীঘের) জবর-দখলে নিতে মেতে উঠেছে একই এলাকার মৃত আহমদুল হকের পুত্র রেজাউল করিম।সে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে তার নেতৃত্বে ৭/৮জন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা জালাল মেম্বার ও আবুল হোসেন গংদের চিংড়ীঘের দাঙ্গার ঘোনাটি তার নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রতিদিন রাত্রে হানা দিয়ে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে চলে যায়। সন্ত্রাসী রেজাউলের বাড়ীতে নিয়মিত একদল ডাকাত আশ্রয় নেয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। “দাঙ্গার ঘোনা” নামক একটি মৎস্য ঘোনার ভোগ-দখল নিয়ে স্থানীয় জহির গং এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। যুগের পর যুগ এ ঘোনাটি নিয়ে দীর্ঘদিন দুৃ’পক্ষের লোকজনদের মধ্যে মারামারি, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ ইত্যাদি অপ্রীতিকর ঘটনা সংঘটিত হয়ে আসায় স্থানীয়রা এ ঘোনাটিকে “দাঙ্গার ঘোনা” নামে অভিহিত করে থাকে। জালাল এবং জহির গং সবসময় উক্ত ঘোনা এলাকায় নিজস্ব প্রভাব প্রতিপত্তি বজায় রাখার জন্য এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের ব্যবহার করে থাকেন। সর্বশেষ গত বুধবার রাত ৮টার দিকে সন্ত্রাসী রেজাউল বসতঘরে অবৈধ অস্ত্র রাখার সংবাদ পেয়ে বদরখালী পুলিশ ফাড়ির আইসি (এসআই) অরুণ কুমার চাকমার নেতৃত্বে একদল পুলিশ তার বাড়িতে অভিযানে গিয়ে কাউকে না পেয়ে পূণরায় পুলিশ ফাড়িতে ফিরে যান। পুলিশের সাথে যাওয়া আহত জিসানও ছিল। উল্লেখ্যযে, মো: জিসান জনৈক আবুল হোসেনের মৎস্য পুকুরে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে। ২৪মে সকাল ৭টার দিকে জিসান ৩ মাসের বেতন বাবৎ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আবুল হোসেনের বাড়ি হতে তার বাড়ি ফেরার পথে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী রেজাউলের নেতৃত্বে ১০/১২জন দেশীয় তৈরী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। তার চিৎকারে পিতা-মাতা ও আত্মীয়রা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে। উল্লেখিত বিষয়ে ইতিপূর্বে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, র‌্যাব-কক্সবাজারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও দিয়েছেন।

ঘটনা প্রসঙ্গে বদরখালী পুলিশ ফাড়ির আইসি (এসআই) অরুন কুমার চাকমা জানান, ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারীদের হেফাজতে থাকা একটি দেশীয় তৈরী অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। অস্ত্র উদ্ধারসহ পরবর্তী সিদ্ধান্ত বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জকে জানানো হয়েছে।