সংবাদ সম্মেলনে মরহুম শেখ কামালের স্ত্রী আরফা আক্তারের দাবী-

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

কক্সবাজারের হোটেল মোটেল জোন কলাতলীর আবাসিক হোটেল শেখ কামাল রয়েল প্যালেসের ৯২ শতাংশ মালিকানা ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন আহমেদের। সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবী করেছেন মরহুম শেখ কামাল হোসেনের মা ছফিয়া খাতুন ও স্ত্রী আরফা আক্তার মানুসহ অন্যান্য ওয়ারিশরা। তারা বলেন, আমরা শেখ কামাল হোসেনের সমস্ত ওয়ারিশগণ জসিম উদ্দিন আহমেদকে মালিকানা স্বত্ত্ব বিক্রি করে দিয়েছি। সেই সূত্রে তিনি হোটেলের বৈধ মালিক। যারা তাকে অবৈধ দখলদার বলে মিথ্যা অপপ্রচার করছে তা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মরহুম শেখ কামাল হোসেনের পরিবারের সদস্যদের পক্ষে স্ত্রী আরফা আকতার (মানু) লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

এসময় মরহুম শেখ কামাল হোসেনের শতোর্ধ বৃদ্ধা মা ছফিয়া খাতুনসহ অন্যান্য ওয়ারিশরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরফা আকতার বলেন, জসিম উদ্দিন আহমেদ একজন সম্মানিত ব্যক্তি। একাধারে তিনি সমাজসেবক, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সর্বোপরী দানবীর। মরহুম শেখ কামাল হোসেনের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী সেতারা করিমসহ দুই মেয়ে রেশমি কামাল মনি, কানিজ ফাতেমা ইসলামী শরিয়ত মতে মাত্র ৮ শতাংশের মালিক হন। বাকী ৯২ শতাংশ মালিকানা জসিম উদ্দিন আহমেদকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এমনকি তাকে দখল স্বত্ত্বও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই মতে দীর্ঘদিন ধরে তিনি হোটেলটি পরিচালনা করে আসছেন। শুধু তাই নয়, আসভাবপত্র ও বিভিন্ন ফার্ণিচার সংযোজনসহ হোটেলের সব উন্নয়ন কাজ করেছেন বর্তমান মালিক জসিম।

মালিকানা নেয়ার পর থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে হোটেল পরিচালনা করে আসছেন তিনি। এমতাবস্থায় ওই হোটেলে হেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ নবীসহ কিছু অসাধু ব্যক্তি মিলে মাদক, নারী ব্যবসা এবং বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ করে আসছে।

তাতে জসিম উদ্দিন আহমেদ বাঁধা প্রদান করায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে থাকে। উপস্থিত সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের ব্যবসায়ী সমাজের প্রতি দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার যে আহবান জানিয়েছেন সে আহবানে সাড়া দিয়ে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছি। আমি সরকারের নিয়মিত রাজস্ব দাতা, জেসিকা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহল মার্কেটের মালিক। বিভিন্ন সামাজিক কাজেও আমি জড়িত। বিশেষ করে সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার ত্রাণও বিতরণ করেছি। এগিয়ে এসেছি এই জনপদের উন্নয়নে। শেখ কামাল রয়েল প্যালেসে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা উন্নয়ন-সংস্কার করেছি। আরো উন্নয়নের পরিকল্পনা আছে। কিন্তু এভাবে যদি আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র ও হয়রানী করা হয় তাহলে আমি সব সহায় সম্পদ বিক্রি করে দিয়ে চলে যাবো। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, আমি নাকি অবৈধ অস্ত্রের মালিক। অথচ আমার অস্ত্রের লাইসেন্স আপটুডেট আছে। আমি জীবনের নিরাপত্তার জন্য সরকারকে ভ্যাট-টেক্স দিয়ে অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছি। কোন ধরণের অবৈধ অস্ত্রের মালিক আমি নই। আমি কোন জবর দখলকারীও নই। শেখ কামাল রয়েল প্যালেস ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করেছি। আমার বৈধ মালিকানার কাগজপত্র থাকার পরও বাঁধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমি প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছি। আমার মালিকানার স্বপক্ষে সমস্ত ডকুমেন্ট ‘আয়নার মতো’ পরিস্কার। সংবাদ সম্মেলনে জসিম উদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, রেশমি আকতার মণির স্বামী হেলাল উদ্দিন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবাসায়ী। কানিজ ফাতেমা ও তার স্বামী মোহাম্মদ নবীও ইয়াবা সেবনকারী ও বিক্রেতা। মানবিক বিবেচনায় হোটেলে তাদের থাকার জন্য দু’টি কক্ষ দিয়েছি। সেই সুযোগে তারা হোটেলে ইয়াবাসহ নানা মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। গেস্টদের ইয়াবা ধরিয়ে দেয়। এসবের প্রতিবাদ করায় তারা আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রতিকার চাই। আশা করছি ন্যায় বিচার পাবো। এ সময় হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার মনির হোসেন সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, হোটেলের হিসেব-নিকাশ সবকিছু বর্তমান স্বত্বাধিকারী জসিম সাহেবই দেখভাল করেন। তিনি হোটেল সংস্কার, ডেকোরেশন এবং ফার্নিচারসহ সবকিছু নিজের টাকায় ক্রয় করেছেন। সুতরাং শেখ কামাল রয়েল প্যালেস হোটেলের মালিকানা নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।

সবশেষে মনি, কানিজ ও হেলাল চক্রের মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন আহমেদ।