অনলাইন ডেস্ক : এক মাস হয়ে গেল, জনসম্মুখে দেখা মেলেনি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের। গত ২১ এপ্রিল থেকে আজ ২১ মে। এত দীর্ঘ সময় তাকে কোনো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বা বিদেশি অতিথির সাথে সাক্ষাত করেননি তিনি। ফলে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছেন- যে ব্যক্তিকে নিয়ে নিয়মিত মিডিয়ায় খবর হতো, তার নানা পদক্ষেপ বা বক্তব্য নিয়মিত সংবাদমাধ্যমে আসতো- তার হঠাৎ এমন অন্তর্ধান কেন?

২১ এপ্রিল সৌদি রাজপ্রাসাদের আশপাশে ঘটনা একটি ঘটনা এই প্রশ্নকে সন্দেহের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ওই দিন প্রাসাদের কাছে ব্যাপক গোলাগুলির খবর মিডিয়ায় আসে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ ক’টি সামরিক যান থেকে মুহুর্মূহু গোলা ছোঁড়া হচ্ছে।

পরে অবশ্য রাজপরিবারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, প্রাসাদের কাছাকাছি নাকি একটি ‘খেলনা ড্রোন’ চলে এসেছিল। সেটিকে ‘সত্যিকারের ড্রোন’ মনে করে গোলা ছুঁড়েন নিরাপত্তাকর্মীরা।

এত বড় ঘটনা ‘খেলনা ড্রোন কাছে চলে আসা’ বলে হালকা হিসেবে উপস্থাপনে বিষয়টিকে তখন অনেকে সন্দেহের চোখে দেখেছিলেন। এ ঘটনার পর থেকে যখন কাকতালীয়ভাবে যুবরাজকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না- তখন সেই সন্দেহ আরো ডালপালা ছড়াতে শুরু করে।

এর মধ্যে সৌদি আরবে ‘শত্রু রাষ্ট্র’ হিসেবে গণ্য হওয়া ইরানের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম অনির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে সংবাদ প্রকাশ করে- ২১ এপ্রিলের ঘটনায় বিন সালমান নিহত হয়ে থাকতে পারেন; অথবা অন্তত আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

ইরানের রক্ষণশীল পত্রিকা বলে পরিচিত কায়হান আরও ‘স্পষ্টভাবে’ জানায় যে, ওই রাতে রাজপ্রাসাদে গুলি ও বিস্ফোরণের সময় বিন সালমানের গায়ে দু’টি বুলেটবিদ্ধ হয়। তারপর থেকে তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।’

সৌদি আরবের নাম উল্লেখ না করে কায়হান ‘একটি আরব দেশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো গোপন নথি’র বরাতে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইরানি আরেকটি সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি বলছে, সেই রাতের পর সৌদি কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিন সালমানের নতুন কোনও ছবি বা ভিডিও প্রকাশ হয়নি। এমনকি এপ্রিলের শেষ দিকে সদ্যনিযুক্ত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পোম্পিও তার অভিষেক বিদেশ সফরে সৌদি গেলেও কোনও ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়নি ‘ভবিষ্যৎ বাদশাহ’র চেহারা।

সর্বশেষ রোববার ফার্স নিউজ জানিয়েছে, মালিক আব্দুল আজিজ অফিসার একাডেমি নামে সৌদি আরবের একটি সামরিক একাডেমির এক অনুষ্ঠানে যোগ দেননি যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিন সালমান। অথচ আগের বছরগুলোতে এই অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী যোগ দিয়েছেন।

বিন সালমানের পরিবর্তে রোববারের অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন রিয়াদের গভর্নর ফয়সাল বিন বন্দর বিন আব্দুল আজিজ। এই ঘটনাটি সৌদির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিটির শারিরীক অবস্থা নিয়ে সন্দেহ আরো ঘনীভূত করেছে।