তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় যাকাত ও ইফতার সামগ্রী সংগ্রহের সময় পদদলিত হয়ে ৯ নারী-শিশুর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নলুয়া ইউনিয়নে গাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাঙ্গরমুখ এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তদন্ত দলের সদস্যরা। তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন এমন খবর পেয়ে স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। ওই কর্মসূচিতে স্থানীয়রা দুর্ঘটনার ঘটনায় কবির গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহরের দাবি জানান।

জেলা প্রশাসনের তদন্ত দলে ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাশহুদুল কবির, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) হাসানুজ্জামান, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তসলিমা আক্তার।

তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাশহুদুল কবির বলেন, ঘটনা তদন্তে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেয়া হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা যাবে না।

এদিকে তদন্ত কমিটি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই একই ঘটনা নিয়ে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে আশেপাশের এলাকার হাজারো মানুষ। এ সময় তারা প্রখর রোদ ও তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে সড়কের পাশে মানববন্ধন করে। এসময় তাদের হাতে মামলা থেকে শাহজাহানকে অব্যাহতিসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। দুর্ঘটনার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হওয়া ষড়যন্ত্রমূলক বলেও অবিহিত করা হয়। সকাল থেকেই সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের গাটিয়াডাঙ্গা গ্রাম থেকে ঢেমশা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক জুড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সাতকানিয়ার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এলাকাবাসী এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধনে নলুয়া, ঢেমশা, আমিলাইশ, খাগরিয়া, এওচিয়া, কেওচিয়া, রুপকানিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন হাজারো নারী-পুরুষ। তদন্তদল ঘটনাস্থ পরিদর্শন শেষ না করা পর্যন্ত স্থানীয়রা মানববন্ধন করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ মে সকাল জাকাত ও ইফতার সামগ্রী বিতরণের সময় সাতকানিয়ার হাঙ্গরমুখ এলাকার কাদেরিয়া মুঈনুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পদদলনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ নারী নিহত হয়। ১৫ মে সকালে কেএসআরএম ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শাহজাহানকে প্রধান আসামি করে নিহত হাসিনা আক্তারের স্বামী মোহাম্মদ ইসলাম বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অবহেলায় মৃত্যুর কারণ দেখিয়ে দন্ডবিধি ৩০৪ (ক) ও ৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তারা জামিনে মুক্তি দেন আদালত।