নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ৪মে পবিত্র শবে বরাতের রাতে মহেশখালী উপজেলার কেরুনতলী নয়াপাড়া থেকে পুলিশ যে পাঁচজনকে আটক করেছে তারা নিরপরাধ বলে দাবি করেছেন তাদের পরিবার। একই সাথে ওই ঘটনায় বন্দুকযুদ্ধ ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ যে বক্তব্য দিয়েও তাও সাজানো। সেদিন কোনো অস্ত্র পায়নি পুলিশ। মূলত প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পুলিশ এই ঘটনা সাজিয়েছে। শনিবার কক্সবাজারের এক হোটেল কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানিয়েছেন আটকদের পরিবারের লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ৪ মে পবিত্র শবে রাত ছিলো। এশার নামাজের আগে আটক আক্কেল আলী,অনার্স ফলপ্রার্থী সলিম উল্লাহ ও হাবিবুল্লাহ এবং মনির আলম নামাজ পড়ার জন্য এক সাথে স্থানীয় মসজিদের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। এসময় স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী ফেরদৌস বাহিনীর অন্তত ২০জন সন্ত্রাসীসহ একদল পুলিশ নয়াপাড়া যায়। তারা সেখানে নামাজ পড়তে যাওয়া পথে পেয়ে আক্কেল আলী, সলিম উল্লাহ, হাবিবুল্লাহ ও মনির আলমকে আটক করে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে কোনো মামলাই নেয়। সলিম উল্লাহ মামলা আসামী হলেও তা ছিলো মিথ্যা মামলা। এছাড়া সেদিন কোনো ধরণের বন্দুকযুদ্ধ ও কোনো অস্ত্রই উদ্ধার হয়নি। ফেরদৌস বাহিনীর সন্ত্রাসীরা পুলিশের সাথে যোগসাজস করে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা সাজিয়ে অস্ত্র সরবরাহ করেছে পুলিশকে। শুধু তাই নয়; সেই দিন পুলিশের সামনে ফেরদৌস বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আটকদের ১০টি ঘর ভাংচুর করে মালামাল লুট করেছে।

বক্তব্যে আরো জানানো হয়, আটক সলিম উল্লাহ ও হাবিব উল্লাহ ছাত্র। তারা চট্টগ্রামে স্থায়ীভাবে থেকে পড়ালেখা করছে। এবার অনার্স পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। শবে বরাত উপলক্ষ্যে ছুটি থাকায় ওইদিন তারা বাড়িতে আসে। অন্যদিকে আক্কেল আলী ও মনির আলমও নিরপারাধ ব্যক্তি। তারা দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। কিন্তু ৮০ দশকের পূর্ব শত্রুতার জের স্থানীয় মৃত বক্সু মেম্বারের গোষ্ঠীর কিছু দাগী সন্ত্রাসী প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে পুলিশকে দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পরিবার ইতিমধ্যে পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আসল ঘটনা হলো, চিংড়ি ঘের দখল-বেদখল নিয়ে ফেরদৌস ও তার চাচাতো ভাই আকতার হামিদের মধ্যে দীর্ঘদিন লড়াই চলছে। তারা নিজেরা প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে এলাকার নিরীহ লোকজনকে মামলা-হামলাসহ নানাভাবে হয়রানি করছে। আক্কেল আলী, অনার্স ফলপ্রার্থী সলিম উল্লাহ ও হাবিবুল্লাহ এবং মনির আলম এই হয়রানির সর্বশেষ শিকার।

এভাবে হয়রানির ও প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন আটক সলিম উল্লাহর বড়ভাই প্রাথমিকের শিক্ষক গোলাম কুদ্দুসও। তিনি চাকরির সুবাদে দীর্ঘ ধরে এলাকার বাইরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। তারপরও প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে গোলাম কুদ্দুসকে হত্যা মামলা আসামী করে মৃত বক্সু গ্রুপ। এই মামলার কারনে তিনি চাকরি থেকে বরখাস্ত আছেন। চাকরি না থাকায় এখন কঠিন অর্থকষ্টে পড়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন পারছেন।