সোয়েব সাঈদ, রামু :

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, বিলাসিতায় গা না ভাসিয়ে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য প্রবাসে নিজের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করেছেন যুবক আবুল কালাম আজাদ। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় গড়ে উঠা একে আজাদ উচ্চ বিদ্যালয় এখন রামুর অন্ধাকারাচ্ছন্ন চাইল্যাতলী এলাকায় আলো ছড়াচ্ছে। এলাকাটি এখন অশিক্ষার কবল থেকে মুক্ত। এখানকার শিশুরা একদিন দেশ গড়ার কারিগরে পরিনত হবে। এসবের জন্য প্রসংশার দাবি রাখে আবুল কালাম আজাদ। রামুর যুবক আবুল কালামের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ বিদ্যালয়টিকে এমপিও ভুক্ত করা সহ সকল সমস্যা দূর করতে সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চাইল্যাতলী এলাকার একে আজাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি কমল এসব কথা বলেন। শনিবার (১২ মে) সন্ধ্যায় বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং হাজ্বী মোতালেব আল মাছিয়া ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠানে সাংসদ কমল বলেন, বঙ্গবন্ধু -১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অফুরন্ত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এরমাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে নতুনভাবে পরিচিতিও অর্জন করলো। সরকারের অন্যতম সফলতার অংশ এ মহাকাশ জয়।

মুক্তিযুদ্ধকালীন পিতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাংসদ কমল বলেন, রাজাকার ও পাকহানাদাররা বাহিনী তাদের বিশাল বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিলো। পরে বাবা ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী মানুষের পুড়ে যাওয়া বাড়ি তৈরীতে ব্যস্ত হওয়ায় ১৬ বছরেও নিজেদের জন্য বাড়ি তৈরী করতে পারেননি। এমন সময়ে তিনি কক্সবাজার মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জেলার শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে যান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) চাই থোয়াইহ্লা চৌধুরী, কক্সবাজার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর অধ্যক্ষ প্রদীপ্ত খিসা, ডেইলী স্টার এর কক্সবাজারস্থ স্টাফ রিপোর্টার মুহাম্মদ আলী জিন্নাত ও রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক প্রমূখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, একে আজাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ নজরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়ের অভাবে এখানকার হতদরিদ্র মানুষের শিশুরা পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত ছিলো। এলাকাটি ছিলো অপরাধ প্রবন। চলতে বাল্য বিয়ে। এসব প্রতিরোধ করে এলাকার নতুন প্রজন্মকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে এখানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। অনেক বাধা পেরিয়ে এ বিদ্যালয় সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এমপিওভুক্ত করা হলে এ বিদ্যালয় জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ে পরিনত হবে।

অনুষ্ঠানে পানেরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ উদ্দিন আহমদ, নিজেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৌলানা আমান উল্লাহ, মোহনা টিভির কক্সবাজার প্রতিনিধি আমানুল হক বাবুল, সাংবাদিক সোয়েব সাঈদ, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আবু বকর ছিদ্দিক, সহকারি শিক্ষক ইয়াছমিন আকতার, জাহেদুল ইসলাম, আবদুর রহিম, পুলক কান্তি চৌধুরী, জয়সেন ধর, আলি আহমদ সিফাত, এম আবুল মনছুর, আকিবুল হোছাইন, শাফিয়া সুলতানা, এরশাদ উল্লাহ, সাবিনা ইয়াছমিন, সাইফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, চাইল্যাতলী এলাকার মানুষ ছিলো শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। ২০১১ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে আবুল কালাম আজাদ এখানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে গ্রামটিকে আলোকিত করার উদ্যোগ নেন। যার সুফল এখন এলাকাবাসী পাচ্ছে। সরকার, জনপ্রতিনিধি আর সমাজের বিত্তবানরা যা পারেনি, আবুল কালাম আজাদ তাই করে দেখিয়েছেন। তাঁর অবদানকে মানুষ আজীবন স্মরণ করবে। অনুষ্ঠানে সাংসদ কমলসহ অতিথিবৃন্দ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করেন। এতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।